ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দুই জেলার ২৮ গ্রাম প্লাবিত

  • ৩-মে-২০১৯ ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ
Ads

ফাইল ছবি 

:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে শক্তিশালী জোয়ারে উপকূলীয়  দুই জেলার অন্তত ২৮টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকাল থেকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে কোথাও কোথাও। ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে পৌঁছানোর আগেই উপকূলীয় ১৯ জেলার ২১ থেকে ২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। প্রতিটি জেলায় মাইকিং করে ঝুকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. শাহ কামাল। তিনি আরো জানান, সন্ধ্যার মধ্যে ২১ থেকে ২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

শুক্রবার (০৩ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ অবস্থা ও প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব এ তথ্য জানান।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের চাপে পটুয়াখালীতে বেশ কিছু পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে তিনটি উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, ফসলি জমি। মির্জাগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে আছি। প্রায় আড়াইহাজার মানুষ বাস করে এই এলাকায়।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, মির্জাগঞ্জ উপজেলার ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারে বাঁধ আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। নদীর পানি বেড়ে পাওয়ায় ওই পয়েন্ট দিয়ে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। কলাপাড়ার নিজামপুর পয়েন্ট দিয়েও পানি ঢুকছে গ্রামে। আমরা এলাকায় আছি। মানুষ যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই চেষ্টা করছি।

এক পর্যায়ে মেহেন্দিয়াবাদ, চরখালী, গোলখালী রানীপুরসহ পাচঁটি গ্রাম প্লাবিত হয়। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকার পাশাপাশি মুগডালের ক্ষেত তলিয়ে যায়।

জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধের দেড় কিলোমিটার ফাঁকা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে লালুয়ার চারিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মাঝের হাওলা, ছোট ৫ নং, বড় ৫নং, নয়াকাটা, সেনের হাওলাসহ অন্তত ১০টি গ্রাম এবং মহিপুরের নিজামপুর পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে মহিপুরের নিজামপুর কমরপুর, সুধিরপুরসহ ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ উপচে ফুলতলা, মাটিভাঙ্গাঁ, ভাজনাসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে জোয়ারের পানির চাপে বেড়িবাঁধ উপচে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ঢুকে বগী, সাতঘর ও দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের অন্তত একশ বাড়িঘরে তালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সাউথখালি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, বলেশ্বর নদীর বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের একটি অংশ উপচে গ্রামের বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশুর, মোংলা, বলেশ্বর, ভৈরব ও পানগুছি নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পানি আরও বাড়তে পারে। জোয়ারের পানির চাপে শরণখোলায় বাঁধের নিচু অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

ফণীর প্রভাবে বাগেরহাটের কিছু এলাকায় সকালে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা ও রামপাল উপজেলার নদীতীরের বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

 

/কে 

Ads
Ads