ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর প্রতিশোধ নিয়েছেন নানক-রহমান!

  • ১৪-মে-২০১৯ ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ
Ads

উৎপল দাস
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিয়ে সমালোচনার যেন শেষ নেই। সর্বশেষ ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে এবং পদবঞ্চিতদের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তাত হামলার পর এ বিতর্কিত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাচাই বাছাই করে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি বিতর্কহীন কমিটি উপহার দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। 

কিন্তু ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে সাথে নিয়ে সাবেক কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনকে নিয়ে সিরিজ বৈঠক করেছেন। কিন্তু এত বৈঠকের পরও কেন এমন বিতর্কিত কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হলো; তা নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এমনকি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা বলেছেন, ছাত্রলীগকে আবারো ধ্বংস করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ইন্ধন দিয়েছেন এমপি এবং মন্ত্রিত্ব হরানো দলের দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তারা ইচ্ছে করেই এমনটা করেছেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। 

তারা আরো বলেন,  ছাত্রলীগকে দুর্বল করতে পারলেই একসময় আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে যাবে। এটা বিশ্বাস করেন বলেই তারা (নানক-রহমান) শোভন-রাব্বানীকে দিয়ে এমন একটি কমিটি দিয়ে আবারো সমালোচনায় ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ছাত্রলীগকে। ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গিয়ে তারা নিজেদের এমপিত্ব কেড়ে নেয়ার নির্মম প্রতিশোধ নিয়েছেন বলেও মনে করেন অনেকে। বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানাবেন বলেও জানা গেছে। 

এদিকে, ছাত্রলীগের ঘোষিত ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন বিবাহিত, মাদক ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত, বিতর্কিত নারী নেত্রী থেকে শুরু করে বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তানেরা। এমনকি যারা ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে নির্বাচন করে ডাকসুতে জয়ী হয়েছেন তাদের অনেককেই এই কমিটিতে রাখা হয়নি। এ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ডাকসুর নির্বাচিত ২৩ জন ছাত্রলীগের নেতার প্রথম পরিচয় তারা ছাত্রলীগ করেন এরপর তারা ডাকসুর নেতা। তবে কেন সবাইকে পদে রাখা হলো না, বিশেষ কয়েকজনকে কি উদ্দেশ্যে পদ দেয়া হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের কমপক্ষে ২২ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নতুন কমিটিতে ঠাঁই দেয়া হয়নি। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এমনকি সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজ থেকে জেলা থেকেই নেতা হয়েছেন ২১ জন। বিতর্কিতদের কমিটিতে পদায়ন করতেই যোগ্যদের কেন বাদ দেয়া হলো দলীয় ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই সে বিষয়ে ব্যাখা চাওয়া হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের কাছে। 

এসব বিষয়ে মতামত জানার জন্য প্রতিবেদক বিকাল ৪ টা ১৯ থেকে ২১ মিনিটের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমানকে ফোন করেন। কিন্তু তারা কেউই ফোন ধরেননি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এই দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।  

 

Ads
Ads