আ.লীগের রাজনীতিতে ডা. দীপু মনির ভবিষ্যত অন্ধকারের পথে!

- ১৮-মে-২০১৯ ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ
উৎপল দাস
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি। তবে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন করার পক্ষে ইতিমধ্যে দলীয় ফোরামে মত দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ২১ তম জাতীয় সম্মেলন সম্ভবত আগামী বছরের শুরুতে অথবা মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই হবে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
আগামী সম্মেলনকে ঘিরে এখনই আওয়ামী লীগের নেতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করার মধ্য দিয়ে বর্তমান কমিটির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা পদ ধরে রাখা বা পদোন্নতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
আওয়াামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের সম্মেলন ঘিরে প্রত্যাশা বা প্রস্তুতির বিষয়ে কথা হয়েছে গত ১ মাস ধরেই। তারা নিজের মতো করে একটি কথাই বলেছেন, আপা (শেখ হাসিনা) আমাকে যেখানে রাখবেন, সেটাই সঠিক। এরপর আর কোনো কথা থাকতে পারে না। এরপরও দলের জন্য, শেখ হাসিনার জন্য অবশ্যই নিজের অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন যে যার মতো। এমনটা নিশ্চিত হওয়া গেছে ভোরের পাতার পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম থেকে শুরু করে সম্পাদক পদমর্যাদার নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে ভোরের পাতার এ প্রতিবেদকের।
তাদের কাছে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনির রাজনৈতিক অবস্থান কেমন হবে আগামী সম্মেলনে সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়? আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোরের পাতাকে সরাসরি বলেছেন, সম্মেলনে তাকে কোনো পদেই রাখবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের মধ্যে বিশেষ করে অন্যদের সম্পর্কে নেত্রীর কানভারি করার অভিযোগ রয়েছে দীপু মনির বিরুদ্ধে। নেত্রীর খুব কাছাকাছি থাকার কারণে বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনার মুড বুঝে দীপু মনি তার কানে মিথ্যা তথ্য তুলে দেন। আপা (শেখ হাসিনা) প্রথমে সেটি বিশ্বাস করলেও পরে যখন বুঝতে পারেন তখন ধমক দিয়ে সাবধানও করেছেন। যেন কারো বিরুদ্ধে কিছু না বলেন, কিন্তু দীপু মনি গত কয়েক বছর ধরেই এমনটা করে আসছেন। কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, দীপু মনি আমার রাজনৈতিক পদের জন্য প্রতিপক্ষ নন। আমাকে শেখ হাসিনা প্রেসিডিয়াম সদস্য বানিয়েছে, কিন্তু আমাকে মন্ত্রিত্ব দেয়ার বিষয়ে আলাপ আলোচনার সময় নেত্রীর কাছে গিয়ে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কানভারি করেছে। এটা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসাবে দীপু মনির কাছ থেকে আশা করা যায়না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের প্রথম কাউন্সিল-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এম.এ ওয়াদুদের কন্যা হিসাবে ডা. দীপু মনি এমনিতেই প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন। কিন্তু তারপরও অন্যদের নিয়ে কথা বলার অভ্যাসের কারণেই আগামী দিনের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন দলের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য। কারণ নেত্রী দীপু মনিকে এখন পর্যন্ত দল ও সরকারে যা কিছু দিয়েছেন সবই তার পিতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের দিকে তাকিয়েই দিয়েছেন। আগামী সম্মেলনে দীপু মনির জায়গায় নতুন কোনো ত্যাগী নেতার মেয়ে অথবা মাঠের রাজনীতিতে পোড় খাওয়া কাউকে তিনি আনতে পারেন। এমন অনেক নেত্রীই আওয়ামী লীগের রয়েছে যাদের ত্যাগ দীপু মনির চেয়ে অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে দীপু মনির রাজনৈতিক ভবিষ্যত কোন পথে যাবে সেটি সময়ই বলে দিবে। তবে শেখ হাসিনা চাইলে তাকে রাখতে পারেন, না চাইলে তার ভবিষ্যত অন্ধকার এটা মোটামুটি নিশ্চিতই বলা চলে।
এসব বিষয়ে দীপু মনির ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোনে সকাল ১০ টা ৫১ মিনিটে এ প্রতিবেদক প্রথমে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে অপেক্ষা করেন। এরপর ফোন দেয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, দিপু মনি বেলা ১২.৪৫ মিনিটে এ প্রতিবেদকে ফোন ব্যাক করে দীর্ঘ ১২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড কথা বলেছেন। তবে, তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কোনো অফিসিয়াল মন্তব্য করতে রাজি হননি।