ব্রিটিশদের শাসন করে সেমিতে অস্ট্রেলিয়া

- ২৫-Jun-২০১৯ ০৬:১৫ অপরাহ্ন
:: স্পোর্টস ডেস্ক ::
অবশেষে বিশ্বকাপ ২০১৯ সালের ২৫ জুন ব্রিটিশদের ৬৪ রানে পরাজিত করল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট যোদ্ধারা। এর মাধ্যমে নিজেদের সেমির পথ অনেকটা পাকাপোক্ত করে নিল অজি শিবির। এদিকে পরপর দুই হারে সেমির দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে গেল ইংল্যান্ড।
অজিদের দেয়া ২৮৫ রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতে তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পরে ইংলিশরা। আউট হয়েছেন দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ভিন্স, বেয়ারস্টো, জো রুট, বাটলার ও দলনেতা মরগান। মুলত তাদের আউটের পরই ইংল্যান্ড দল ব্যাকফুটে চলে যায়। সে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে ক্যাঙ্গারুদের দৌড়ে পাল্লা দিয়েও আর নাগাল পায়নি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।
কিন্তু পাল্লার দৌড়ে শেষ অব্দি আউট হন বেন স্টোকস। স্টার্কের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন ৮৯ রানে। তিনিই জোরেসোরে হাল ধরেছিলেন দলের। তাকে আউট করে যেন জয়ের বন্দরে উড়াল দেয় অজি শিবির।
অস্ট্রেলিয়ার করা ২৮৫ রানের জবাবে ৪৪.৪ ওভারেই থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। করতে পারে মাত্র ২২১ রান। হেরে যায় ৬৪ রানে।
ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই শুরুর ধাক্কা ইংলিশ শিবিরে। অজিদের ২৮৫ রান তাড়া করতে নেমে ১ম ওভারের ২য় বলেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। বেহ্রেনডর্ফের বলে রানের খাতা খোলার আগেই শূন্য রানে বোল্ড হয়ে যান জেমস ভিন্স।
এর পরই জ্বলে উঠেন মিচেল স্টার্ক। তার বলে ৮ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ডেঞ্জারম্যান জো রুট। স্টার্কের আরেক বলে ইংলিশ অধিনায়ক মরগান আউট হন থার্ডম্যান অঞ্চলে দাঁড়ানো কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে। যাবার আগে তিনি দিয়ে যান ৪ রান। বেয়ারস্টো প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও ২৭ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
বাটলার আর স্টোকস মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও স্টয়নিসের বলে মাত্র ২৫ রানেই ক্যাচ আউট হয়ে যান তিনি। এক প্রান্ত আগলে রাখা বেন স্টোকস তুলে নেন নিজের ফিফটি। ওকসকে সঙ্গে নিয়ে জয় পেতে বলতে গেলে একাই লড়াই করেছেন তিনি।
তবে বেন স্টোকস স্টার্কের বলে সরাসরি বোল্ড আউট হন ৮৯ রানে। তাকে আউট করেই যেন জয়ের বন্দরে ওড়া শুরু করে অজিরা। ক্রিস ওকস ২৬, মঈন আলী ৬ ও জোফরা আর্চার ১ রানে আউট হন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রশিদ আউট হওয়ার পরই ইংলিশ বধের উল্লাসে ফেটে পড়ে অজিরা।
বেহ্রেনডর্ফ একাই নেন ৫ উইকেট। এছাড়া স্টার্ক ৪ উইকেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিশ্বকাপের ৩২তম ম্যাচে লর্ডসে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় খেলা। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান।
টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ ক্যাপ্টেন ইয়ন মরগান। শুরুতে ব্যাট হাতে দারুণ সূচনা করে অস্ট্রেলিয়া। শুরুতে ব্যাট করে মোটামুটি মানের স্কোর সংগ্রহ করে অজিরা।
ব্যাট হাতে ইনিংসের উদ্বোধন করতে নামেন ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ। শুরুতে দেখে খেলার একটু পরেই হাত খুলে ব্যাট করতে শুরু করেন দুই অজি ওপেনার। ফিঞ্চ তুলে নেন বিশ্বকাপে আরও একটি অর্ধশতক। ওয়ার্নারও তার ব্যাটিং ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তুলে নেন অর্ধশতক।
এরপর মঈন আলীর বলে ৫৩ করে জো রুটের কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ওয়ার্নার। স্টোকসের বলে ২৩ রানে খাজা বোল্ড হওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকলেননা ফিঞ্চও। বিশ্বকাপে নিজের ২য় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরের বলেই জোফরা আর্চারের বলে আউট হয়ে যান তিনি।
এরপর স্মিথ ও ম্যাক্সওয়েল হাল ধরার চেষ্টা করলেও মার্ক উডের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ম্যাক্সওয়েল। এর আগে মাত্র ১২ রান করেন তিনি।
স্মিথ চেষ্টা করেও পারেননি ইনিংস বড় করতে। তিনি ৩৮ রানে ওকসের বলে বিদায়ের আগে ব্যক্তিগত ৮ রানে থাকা অবস্থায় রান আউটের শিকার হন স্টয়নিস।
শেষদিকে ক্যারি ছাড়া আর কেউই তেমন রান করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ২৮৫ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ক্যারি অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে।
বল হাতে ইংল্যান্ডের হয়ে ২ উইকেট নেন ওকস। ১টি করে উইকেট নেন আর্চার, উড, স্টোকস ও মঈন আলী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া ২৮৫/৭ (৫০ ওভার)
ফিঞ্চ ১০০, ওয়ার্নার ৫৩
ওকস ৪৬/২, স্টোকস ২৯/১
ইংল্যান্ড ২২১ (৪৪.৪ ওভার)
স্টোকস ৮৯, বেয়ারস্টো ২৭
বেহ্রেনডর্ফ ৪৪/৫, স্টার্ক ৪৩/৪
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৬৪ রানে জয়ী