সংসদে অর্থবিলও উত্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

- ২৯-Jun-২০১৯ ০১:০৩ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে বাজেট বক্তৃতা পড়ে দেয়ার পর তার পক্ষে অর্থবিলও সংসদে উত্থাপন করলেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৯ জুন) সংসদে অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিলটি উত্থাপন করেন।
বাজেট পাসের আগে বাজেটের রাজস্ব অংশের আলোচিত-সমালোচিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে পরিবর্তন প্রয়োজন হলে প্রধানমন্ত্রী তা সংশোধন করতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। পরে অর্থমন্ত্রী তা সংশোধন করে নিলে অর্থ বিল সংসদে পাস হয়।
গত ১৩ জুন অসুস্থ অর্থমন্ত্রী পুরোপুরি বাজেট বক্তৃতা পড়তে পারেননি। তখন প্রধানমন্ত্রী বাকি বক্তৃতা পড়ে দেন। দেশের ইতিহাসে যা ছিলো নজিরবিহীন। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনও করেন শেখ হাসিনা।
এরপর সংসদে বাজেটের উপর পুরো আলোচনায় অনুপস্থিত থাকলেও শনিবার অধিবেশনে যোগ দেন মুস্তফা কামাল।
প্রধানমন্ত্রী বাজেটের উপর তার সমাপনী ভাষণে অর্থমন্ত্রীর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, তারপরও তিনি অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।
এরপর স্পিকার শিরীন শারমিনের অনুমতি নিয়ে বসে বাজেট আলোচনায় কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। পরে স্পিকার জানান, অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন অর্থ বিল সংসদে তোলার জন্য। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে বিলটি সংসদে উত্থাপন করার আহ্বান জানান।
বিলের ওপর জনমত যাচাই ও সংশোধনী নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যদের বিভিন্ন কথার জবাবও দেন শেখ হাসিনা। তার আগে বাজেট আলোচনায় দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের একটা সমস্যা দুর্নীতি। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা সব সময়ই নিজেরা দুর্নীতির আশ্রয় নেয় আর সমাজে দুর্নীতিটাকে তারা ছড়িয়ে দেয় ব্যাধির মতো। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার নীতি হচ্ছে জিরো টলোরেন্স। আমি সব সময় বলেছি, জোর দিয়ে বলেছি..দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের প্রচেষ্টাটা অব্যাহত থাকবে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, আর্থিক ক্ষেত্রে সার্বিক শৃঙ্খলা আনার জন্য বাজেটে কিছু সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। খেলাপি ঋণ হ্রাসের জন্য অর্থমন্ত্রী যেই উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছেন তা অত্যন্ত সময় উপযোগী। পাশাপাশি আমার সুপারিশ থাকবে যেন ব্যাংক ঋণের উপর সুদের হার এক অংকের মধ্যে রাখা হয় অর্থাৎ সিঙ্গেল ডিজিট। এটি করা গেলে শিল্প ও ব্যবসা খাতকে প্রতিযোগিতা সক্ষম করে গড়ে তোলা সক্ষম হবে। কারণ উচ্চহারে সুদ থাকলে কোনো ইন্ডাস্ট্রি বিকশিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, একটি সমৃদ্ধ অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন বিকশিত একটি পুঁজিবাজার। এই বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য অনেক প্রণোদনা থাকছে। এই সব প্রস্তাব বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ হবে। এভাবে পুঁজিবাজার তার কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে বলে আমি আশা করি।
দেশের উন্নয়নে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানোর উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। এই তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি, কারণ তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। সরকার এই শ্রম শক্তির উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আমি মনে করি, বিশেষ জনগোষ্ঠির প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুবকদের মধ্যে স্টার্ট আপ মূলধন সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব অত্যন্ত সময় উপযোগী।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব রেমিটেন্সে গতি দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গবেষণাকে উৎসাহিত করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাবের বিষয়টি দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গবেষণা করে পাটের জন্মরহস্য উদঘাটন করেছি। এভাবে একে একে অন্যান্য সবজিসহ ফলমূল নিয়ে গবেষণা করে আমাদের উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।