যেসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে চরম তোপের মুখে ইবি উপাচার্য রাশিদ আসকারী!

- ৬-Jul-২০১৯ ০৫:১৬ অপরাহ্ন
উৎপল দাস
স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য হিসাবে ২০১৬ সালের ২১শে আগষ্ট দায়িত্ব পেয়েছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো: হারুন -উর- রশিদ আসকারী (রাশিদ আসকারী)। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে তার নতুন যৌবন। আন্তর্জাতিকরণের রুপকার ড. রাশিদ আসকারীর বলিষ্ট নেতৃত্বে সততা- স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতাকে মূলমন্ত্র ধরে উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো: সেলিম তোহাকে সাথে নিয়ে দূর্বার গতিতে ক্যাম্পাসকে ঢেলে সাজিয়ে চলেছেন।
কিন্তু কিছু বিতর্কিত ঘটনায় এবং একই অপরাধে ব্যক্তিভেদে ভিন্নরকম সিদ্ধান্ত দিয়ে চরম বিতর্কের মুখে আছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এই উপাচার্য। তার সময়ে আলোচিত কিছু কেলেঙ্কারীর মধ্যে রয়েছে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামানের নারী কেলেংকারী। নারী কেলেংকারির মতো গর্হিত ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে তদন্ত কমিটি হওয়ার পুর্বেই সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং পরে তদন্ত সাপেক্ষে আসাদুজ্জামানকে চাকুরীচ্যুত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এরপর একই বিভগের শিক্ষক রুহুল আমিনের নিয়োগ বানিজ্যের ঘটনায় সেই শিক্ষককেও তদন্ত কমিটি হওয়ার পুর্বেই সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং পরে তদন্ত সাপেক্ষে ইনক্রিমেন্ট বন্ধসহ নানা শাস্তি দেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও রহুল আমিন পরবর্তীতে এই ঘটনায় আদালত থেকে নির্দোশ প্রমাণিত হন। তার কিছু দিন পরেই ফাঁস হয় বাংলা বিভাগের শিক্ষক বাকী বিল্লাহ বিকুল এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এর নিয়োগ বানিজ্যের অডিও তার দুজনই তাদের কথোপকথনে একজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। তিনি হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৎকালীন সভাপতি প্রফেসর ডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
যদিও ওই ঘটনায় শিক্ষক আজাদ এবং বিকুলকে কোন প্রকার বহিষ্কার ছাড়াই বহাল তবিয়তে রখেই তদন্ত কমিটি করেছিনলেন ইবি উপাচার্য এবং প্রফেসর ডঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের জড়িত থাকার বিষয়টি আমলেই নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২৮ জুন আবারও সেই নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা ঘটে এবং ফাঁস হয়ে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক রহুল আমিন এবং ট্রিপলি বিভাগের শিক্ষক আব্দুর রহিমের নিয়োগ বানিজ্যের অডিও। এই ঘটনাই কোন চিন্তাভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি দুইজনকেই সাময়িক বহিষ্কার করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঠিক একই দিন ২৮ জুন টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরেফিনের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী মতো জঘন্য ঘটনা ফাঁস হয় কিন্তু কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ভুক্তভোগী মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রতারণার বিচার চেয়ে অনেক আগেই আবেদন করেছিলেন যেটা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং খোদ উপাচার্য রাশিদ আসকারী নিজেই। এখন পর্যন্ত এই আরেফিনের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ইবি উপাচার্য।
উল্লেখ্য, নারী কেলেংকারির দায়ে অভিযুক্ত এবং উপাচার্যের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত ড. মাহবুবুল আরেফিনের বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনাকারী ও ষড়যন্ত্রকারী তাহের উদ্দীন ঠাকুরের ভাতিজা ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে তার আমলে ঘটে যাওয়া এসব কেলংকারির বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভোরের পাতার অফিস থেকে ফোন করা হলেও ড. মো: হারুন -উর- রশিদ আসকারী ফোন রিসিভ করেননি।