রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দু’বার মিয়ানমারে গেছেন: প্রধানমন্ত্রী

- ৮-Jul-২০১৯ ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দু’বার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে, প্রয়োজনে আবারও পাঠাবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মনে করেন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যা চীন কাজ করবে বলে তিনি আমাকে আশ্বাস প্রদান করেছেন। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, এ সমস্যা সমাধানে তার দেশ তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুইবার মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার জন্য পাঠিয়েছেন। প্রয়োজনে আবার পাঠাবেন।’
সোমবার (৮ জুলাই) গণভবনে চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং আমাকে অভিনন্দন জানান। চীনা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে সম্মত করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুবার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনে তারা তাদের মন্ত্রীকে আবারো মিয়ানমারে পাঠাবেন।’
রোহিঙ্গা সমস্যা এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি জানিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চীনা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এ অঞ্চলের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ওপর আমি গুরুত্ব আরোপ করি। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে এই স্থিতিশীলতা সংকটাপন্ন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আমি বৈঠকে উল্লেখ করি।’
এছাড়া, দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় পাঁচটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। এর গুলোহলো অর্থনৈতিক বিকাশ, বাণিজ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন. যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গা ইস্যু, ইকোনমিক করিডোর। চীনা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে তার দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে অবহিত করেন। এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো উচ্চ স্তরে নিয়ে যেতে চান বলে চীনা প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও রোহিঙ্গা ইস্যুটি জায়গা পায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যতোদূর সম্ভব চীন চেষ্টা করে যাবে। বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার আমাদের (চীন) ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দু’দেশই আমাদের কাছে সমান কেউ কম বা বেশি নয়।’
এর আগে, গত ১ জুলাই ৫ দিনের সরকারি সফরে ঢাকা থেকে চীন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। চীনের ভাইস ফরেন মিনিষ্টার লু ঝায়োহু এবং চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো.ফজুলল করিম তাকে বিদায় জানান।
চীন সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগদান করেন এবং ‘কোপারেশন ইন দি প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকা এবং বেইজিং-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ৯টি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ৪ জুলাই চীনা প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন সিপিসির কার্যালয় গ্রেট হল অব দ্যা পিপল-এ চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিংয়াং-এর সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়।
যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তার জন্য এলওই (লেটার অব এক্সচেঞ্জ) এবং অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ,সংস্কৃতি এবং পর্যটন সংক্রান্ত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক।