ট্রাম্পের কাছে হিন্দু নারীর নালিশ: বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু নিখোঁজ!

- ১৯-Jul-২০১৯ ১২:৪৩ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
সম্প্রতি চীন, তুরস্ক, উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমারসহ ১৬টি দেশে সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার হওয়া মানুষদের কয়েকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল হোয়াইট হাউসে। গত ১৬ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন তারা।
ট্রাম্প যখন একে একে সবার বক্তব্য শুনছিলেন তখন এক নারী নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে বলেন, স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশেই থাকতে চাই।
ট্রাম্প তখন বলেন, ‘বাংলাদেশ?’ জবাবে হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে ওই বাংলাদেশি নারী আরও বলেন, এখনও সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। সেখানে আমি আমার ঘরবাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমিজমাও দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এর কোন বিচার হয়নি।
ওই নারীর এমন বক্তব্যের পর ট্রাম্প বলেন, কারা জমি দখল করেছে, কারা ঘরবাড়ি দখল করেছে? তখন ওই নারী বলেন, মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়। সবসময়।
তবে ট্রাম্পের কাছে করা ওই নারীর এমন নালিশের সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন এমন ঘটনার কোন সত্যতাই পাওয়া যায়নি। বরং এদেশে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের মধ্যে যথেষ্ট সম্প্রীতি রয়েছে। এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরা ওই নারীর বক্তব্য ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়। এই অভিযোগকে দেশের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র দাবি করে ওই মহিলার বিচারের দাবি জানিয়েছে নেটিজেনরা।
ভিডির নিচে কমেন্টে জাহিদুর রহমান লিখেন, ‘এই মহিলা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। সরকারের উচিত এই মহিলাসহ তার সাথের সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনা।’
‘এত বড় মিথ্যাচার! যারা আজ বাংলাদেশে চাকুরী থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই একটা অঘোষিত কোঠা পেয়ে গেছে, যারা আজকে এমপি, মন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশের বড় বড় জায়গায় আধিপত্য বিস্তার করেছে অথচ তারাই বলছে তারা নাকি বিচার পায় না, অত্যাচারিত, লাঞ্ছিত! এটা দেশের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র।’ - মোবারক হোসেনের মন্তব্য।
নাঈম হায়দার ভিডিওটি তার ওয়ালে শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন, ‘ভাই শুধু এই মহিলার দোষ দিয়া লাভ নাই। কারন এইটা একটা নাটকের অংশ মাত্র। তারা সবাই এর সাথে জড়িত। তারা বাংলাদেশে কিছু একটা করার পরিকল্পনা করতাছে। আমেরিকা ভালো করেই জানে এই দেশের খবর।’
‘এটি একটি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দেশের আইনে তার বিচার করা হোক।’ - লিখেছেন সুমন মুনশী।
সাইয়্যেদ জহিরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘বেশি সুখে আছে তো তাই খুশির ঠেলায় পাগলের অভিযোগ। হিন্দু সমাজ বাংলাদেশে এত সুখে থেকে এত সুবিধা ভোগ করে আরও বদনাম করে, যা এই সরকারের জন্য হুমকি।’
/ই