ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে জাসদের সঙ্গে আঁতাত করেছে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা আরাফাত!

- ১৯-Jul-২০১৯ ০৯:৪৯ অপরাহ্ন
::উৎপল দাস::
চলতি বছর এবং আগামী বছরে কমপক্ষে শতাধিক কোটি টাকার মেগা প্রকল্প রয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর আগামী দিনের মেগা প্রকল্পগুলোতে নগ্ন হস্তক্ষেপ করতে চায় দক্ষিণাঞ্চলের সাবেক জাসদ নেতারা। এমনটাই ভোরের পাতার এ প্রতিবেদক নিশ্চিত হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ভরযোগ্য কয়েকটি সূত্র থেকে।
বিশ্বস্ত একটি সূত্র ভোরের পাতার এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দেয়া জাসদ আদর্শিকভাবেই আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের সাথে ঐক্যজোটে আসেনি। নিজেদের দলের অস্তিত্ব সংকটের সময় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সুসময়ের মধু আহরণে এসে ভর করেছে মাত্র। তাই কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকোটি টাকার বেশি মেগাপ্রকল্পগুলো থেকে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেতার জন্য একটি জাসদ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণাঞ্চল তথা বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী আলী রেজা সিদ্দিকী কালুর নির্দেশে জাসদ নেতা সোনা এবং তোতার নেতৃত্বে তার(কালু) আপন ভাতিজাসহ বৃহস্পতিবার রাতে শান্তিডাঙ্গা গ্রামে একসময়ের জাসদ নেতা তোতার বাড়িতে গোপন বৈঠক করেন।। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী কালুর আপন ছোট ভাই আলী মর্তুজা সিদ্দিকী খসরু। বৈঠকে উপস্থিত একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, মিটিং শেষে কালু বাহিনীর নেতা জয়নাল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া হয়। গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যেকোনো মূল্যে ক্যাম্পাসের আশেপাশে নাশকতা চালিয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করা হবে। ফলে ছাত্রলীগের বর্তমান কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে সন্ত্রাসী কায়দাই ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে চাই এই কালু বাহিনী এবং তারই আপন ভাতিজা বহিস্কৃত ছাত্রনেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত।
উল্লেখ্য, নানা অপকর্মের দায়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতকে সংগঠনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। যার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ভাংচুরের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৬ সালে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। তৎকালীন সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাত্র ছাত্রীরা তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন পর্যন্ত করেন। তাছাড়াও পুলিশের কাছ থেকে মদ্যপ আসামী ছিনতাই,ক্যাম্পাসে রমরমা মাদক ব্যবসা করা, টেন্ডারবাজিসহ ক্যাম্পাসে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরসহ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা বিভিন্ন মানুষের ভয় দেখিয়ে তাদের থেকে চাঁদাবাজি করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে আরাফাতের বিরুদ্ধে।
ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেই বাড়ি থাকার কারণে আরাফাত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করে চলেছেন অনেক দিন ধরেই। তার আপন চাচা আলী রেজা সিদ্দীকি ওরফে কালু বাংলাদেশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন। তিনি দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে ছিলেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচে বিতর্কিত এবং বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা, যিনি শেখ হাসিনার মনোনীত ছাত্রলীগে পদ না পেয়ে এখন ঐতিহাসিকভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের দল জাসদের নেতাদের ঢাল হিসাবে ব্যবহৃত হতে যাচ্ছেন সেই ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে কুষ্টিয়ার পুলিশ প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেছেন, কোনোভাবেই জাসদের ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ মাথানত করবে না এবং ষড়যন্ত্রকারীদের প্রশাসনিকভাবে ও আইনগতভাবে প্রতিহত করা হবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করলে তাদের দাঁতভাঙা জবাবও দেয়া হবে। এক্ষেত্রে কুষ্টিয়া অঞ্চলের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের অনুসারীরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করবে বলেও জানা গেছে।