দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী প্রিয়া সাহার নেপথ্য শক্তি কারা!

  • ১৯-Jul-২০১৯ ১০:৪৭ অপরাহ্ন
Ads

::উৎপল দাস::

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন ধর্মের ২৭ জন মানুষকে ডেকেছিলেন তাদের দুর্ভোগের কথা শোনার জন্য। গত বুধবার সেখানে মায়ানমার, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চায়না, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, আফগানিস্তান, নর্থ কোড়িয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান জার্মানি, বাংলাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। 

তাদের প্রত্যেকেই ট্রাম্পকে তাদের নিজ দেশের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন। সেখানেই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নারী ট্রাম্পকে বলেন, তার জমি জমা কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশি মুসলিমরা, তার ঘরবাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।

ওই নারীর বক্তব্যের পর দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। রীতিমতো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকই ওই নারীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা ট্রাম্পকে হ্যাশ ট্যাগ, মেনশন করে জানাচ্ছেন ওই মহিলা মিথ্যে কথা বলেছেন। তবে কেন ওই নারী এমন কথা বললেন তা নিয়ে ভোরের পাতার পক্ষ থেকে গভীর অনুসন্ধানে নামা হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয়া বালা বিশ্বাসের ষড়যন্ত্রের ভয়ংকর পরিকল্পনা ও তার নেপথ্যে শক্তিযোগানদাতাদের পরিচয়। ষড়যন্ত্রকারী প্রিয়া সাহাকে নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব । 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রামের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘুদের সাথে পুরো অনুষ্ঠানটি একটি গণমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করার কারণে ভিডিওটি সকলের সামনে চলে আসে।

ওভাল অফিসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ষড়যন্ত্রকারী প্রিয়া সাহা ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ খ্রিস্টানকে গুম করা হয়েছে। এখনো সেখানে ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে নিয়েছে, আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু সেসবের কোনো বিচার নেই।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জিজ্ঞেস করেন কারা এসব করছে? বাংলাদেশি ওই নারী বলেন, ‘সবসময় উগ্রবাদী মুসলিমরা এই কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই কাজ করে।
 
এরপরই বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে ওই মহিলার নাম প্রিয়া সাহা। তিনি বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়দানকারী।

জানা গেছে, প্রিয়া সাহা মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, রোকেয়া হলে থাকতেন। এখন একটি এনজিও আছে ওনার। 

ভোরের পাতার অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমাজের দলিত শ্রেণীর মানুষের অধিকার আদায়ের নামে বিভিন্ন দাতা দেশ থেকে কোটি কোটি টাকার অনুদান এনে দলিতদের জন্য তেমন কিছু না করে নিজের আখের গুছিয়েছেন। ঢাকায় অভিজাত এলাকায় ওই টাকায় চরম উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন। বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নাটক করে প্রচুর বিদেশি ফান্ড কালেক্ট করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চরবানিরী, মাটিভাঙ্গা, নাজিরপুর, পিরোজপুর।

প্রিয়ার স্বামী মলয় সাহা সহকারী উপপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের দুই মেয়ে কয়েক বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। কিছুদিন পূর্বে প্রিয়া সাহা আমেরিকায় যান।

ভোরের পাতার অনুসন্ধানে আরো বেরিয়ে এসেছে, প্রিয়া সাহা ওরফে প্রিয়া বালা বিশ্বাস চলতি বছরের ১২ জুন তারিখে একটি মাসিক পত্রিকার ছাড়পত্র নিয়েছেন। মাসিক ‘দলিত কণ্ঠ’ নামের পত্রিকারটির ছাড়পত্রে নিজে বিবাহিত হওয়ার পরও স্বামীর নাম ব্যবহার না করে পিতার নাম মৃত নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাসকে অভিভাবক হিসাবে ব্যবহার করেছেন। কোটি কোটি টাকা বিদেশী অনুদান লুটপাটের আশায় এই বিতর্কিত মহিলা প্রত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক হিসাবে অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করেছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বার্থ  বিরোধী কোনো সংবাদ তিনি পরিবেশন করবেন না। কিন্তু পত্রিকাটির ডিক্লারেশন পাওয়ার মাত্র ১ মাসের মধ্যেই আমেরিকয়ায় গিয়ে রাষ্ট্র বিরোধী এমন কথা বলেছেন। উল্লেখ্য, প্রিয়া সাহাকে এই দলিত কণ্ঠ পত্রিকাটির অনুমোদন দেয়া ঢাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল কিভাবে কোনো ধরণের খোঁজ খবর না নিয়ে পত্রিকাটির অনুমোদন দিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই পত্রিকাটির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করতেন কিনা, প্রিয়া সাহার অতীত অপকর্মগুলো বিবেচনায় কেন নেয়া হয়নি, সেটির দায়ভারও কাজী নাহিদ রসুলকে নিতে হবে বলেও মনে করেন অনেকে। এই পত্রিকাটির সব ধরণের প্রচার প্রকাশনা অবিলম্বে বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন সচেতন বাংলাদেশিরা। 

এদিকে, প্রিয়া সাহাকে ট্রাম্প পর্যন্ত পৌঁছাতে যারা কাজ করেছে তাদের সবাইকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিচার ও ফাঁসির দাবি  জানিয়ে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক প্রিয়াংকা দে এ প্রসঙ্গে ভোরের পাতাকে বলেন, ‘প্রিয়া সাহা শুধু হিন্দু ধর্মের লোকদের নয়, পুরো বাংলাদেশকেই বিপদে ফেলে দিয়েছে। একই সঙ্গে মৌলবাদীদের হাতে চমৎকার একটি ইস্যুও তুলে দিয়েছে। এর প্রভাবে পানি যে কতো ঘোলা হবে তা আমরা ধারণা করতে পারছি না। আমার বিশ্বাস তিনি কোন ম্যাসাকারের অপেক্ষায় আছেন। আশা করি, সরকার কোন বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান বের করবে। ইতিপূর্বে এগুলো মোকাবেলা করার অভ্যাস সরকারের আছে।’

সাংবাদিক রুদ্র সাইফুল লিখেছেন, ‘প্রিয়া সাহা মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, রোকেয়া হলে থাকতেন। এখন একটি এনজিও আছে ওনার।

বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নাটক করে প্রচুর বিদেশি ফান্ড কালেক্ট করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চরবানিরী, মাটিভাঙ্গা, নাজিরপুর, পিরোজপুর।

প্রিয়ার স্বামী মলয় সাহা সহকারী উপপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), তাদের দুই মেয়ে কয়েক বছর ধরে মলয় সাহার দুর্নীতির টাকায় আমেরিকায় বসবাস করছেন, কিছুদিন পূর্বে প্রিয়া সাহাকে দুদকের অফিসিয়াল গাড়ি ব্যবহার করে এয়ারপোর্টে পৌছে দেন তার স্বামী, দুদকের সহকারী পরিচালক মলয় সাহা এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সকালে এয়ারপোর্ট পৌছে ফ্লাইট মিস করেন প্রিয়া, তারপর সেদিন রাতেই আরেকটি ফ্লাইটে তিনি আমেরিকায় রওনা হন, তার বিদায় মুহূর্তে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী আকবর কবিরের কন্যা তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির।

প্রিয়া সাহার এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গী হওয়ায় তার স্বামী মলয় সাহাকে অতিদ্রুত চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক; ভুলে গেলে চলবে না তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে অলরেডি অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলেছেন বাংলাদেশের।’

এদিকে, প্রিয়া সাহাকে তিলে তিলে গড়ে তুলতে বাংলাদেশেই অবস্থানকারী কয়েকজন প্রভাবশালী হিন্দুত্ববাদের নেতা যারা কথায় কথায় এদেশের খেয়ে পরে এদেশকে হেয় করে তারা রয়েছেন। এসব ষড়যন্ত্রকারীরা কোনোদিনই বাংলাদেশের ভালো চায় না বলেই প্রিয়া সাহাকে নেপথ্যে থেকে শক্তি জুগিয়েছেন। আগামী পর্বে প্রিয়া সাহার নেপথ্য কারিগরদের বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হবে। কেননা দেশের প্রয়োজনে, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে ড. কাজী এরতেজা হাসান সম্পাদিত ও প্রকাশিত দৈনিক ভোরের পাতা সত্য প্রকাশে আপোসহীন। 
 

Ads
Ads