যে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসছে বিপিএল!

- ৪-Aug-২০১৯ ০৩:৫০ অপরাহ্ন
:: স্পোর্টস ডেস্ক ::
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সপ্তম আসরে আসছে বড় পরিবর্তন। এবারের আসর থেকে কিছু নতুন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে বিপিএল গভর্নিং বডি। এর মধ্যে আছে নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি যুক্ত হওয়া, ফ্র্যাঞ্চাইজি ও খেলোয়াড়দের বর্তমান চুক্তি বাতিল করার মতো বিষয়ও।
রোববার (৪ আগস্ট) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে জরুরি সভায় বসে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সভা শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক মাহবুব আনাম বলেন, সপ্তম আসর থেকে ফ্রাঞ্চাইজির মালিকানায় থাকতে হলে, নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর খেলোয়াড় বাছাই করতে পারবে দলগুলো। চুক্তির আগে কোনো দলই খেলোয়াড় নিতে পারবে না।
গত আসরেই চিটাগং ভাইকিংসের মালিকানা পরিবর্তন হওয়ার কথা ছিল। বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজি ডিবিএল গ্রুপের আর দলটি চালানোর আগ্রহ নেই। অন্যদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছেলে সাহেদ মুহিতও সিলেট সিক্সার্স দল আর চালাতে চাইছেন না। তাতে নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে দুটি দল। নতুন মালিকানায় নাম আসছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। এ ছাড়া বরিশালের জন্যও খোঁজা হচ্ছে নতুন মালিক। সব মিলিয়ে আট দল নিয়ে হবে এবারের বিপিএল।
আজ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব আনাম বলেন, ‘ছয় বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এবার প্রতিটি দলকে বিসিবির সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে হবে। কেউ চাইলে দল গুছিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সেটা কাউন্ট করবে না। দলগুলোর সঙ্গে চুক্তির পরই গভর্নিং কাউন্সিল সব কিছু আমলে নেবে।’
নতুন চুক্তি নিয়ে বিসিবির এই পরিচালক আরো বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে দলগুলোকে চিঠি দিয়েছি। চট্টগ্রাম তাদের মালিকানা ছেড়ে দিয়েছে। এর বাইরে আরেকটি দল আসতে পারে। সর্বোচ্চ আটটি দলকে নিয়ে চার বছরের চুক্তি হতে পারে এবার। অবশ্য দলের সংখ্যা কমও হতে পারে। আশা করি, এক মাসের মধ্যে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিংয়ে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে এবং সেই ভিত্তিতে যেসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেগুলো হলো-
#এর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং সাতটি বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকপক্ষের মধ্যে ষষ্ঠ আসর পর্যন্ত চুক্তি করা হয়েছিল। সে অনুসারে আসন্ন আসর থেকেই সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
#২০১৯ সালের শুরুতে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের পর্দা নামার পর টুর্নামেন্টের প্রথম চক্র শেষ হয়েছে। এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নতুন চুক্তির আওতায় আসতে হবে।
#বিপিএল ধারা ৩.১ অনুযায়ী চুক্তি নবায়নের এবং পারস্পরিক সমঝোতা ও শর্ত নিয়ে আলোচনার জন্য ষষ্ঠ আসর পর্যন্ত অংশগ্রহণ করা দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানাবে বিপিএল গভর্নিং বডি।
#নতুন নিয়মগুলো সপ্তম আসর থেকে শুরু হয়ে চার মৌসুম পর্যন্ত স্থায়ী হবে। অর্থাৎ ১০ম আসরে গিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় চক্র।
#আসন্ন আসর থেকে অংশ নিতে আগ্রহী নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে বিসিবি। এর আগে ‘চিটাগং ভাইকিংস’ অংশ নিতে অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। বিসিবি এখন সেই শূন্যস্থান পূরণ করার পাশাপাশি আরও একটি নতুন দল চাইছে।
#নতুন করে সব শুরুর কারণে প্লেয়ার ড্রাফট/নিলাম শুরু হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করার পর।
#বিপিএলের সপ্তম আসরের জন্য তালিকাভুক্ত দেশি ও বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য উন্মুক্ত প্লেয়ার ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে।
#অষ্টম আসর থেকে খেলোয়াড় ধরে রাখার নিয়ম কার্যকর হবে। অর্থাৎ, বর্তমানে যেসব খেলোয়াড় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, সেগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুই আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে অংশ নিয়েছিল ছয়টি দল। পরের বছর রংপুর রাইডার্স যুক্ত হলে দলের সংখ্যা দাঁড়ায় সাতে। ২০১৫ সালে তৃতীয় আসরে মালিকানা ছেড়ে দেওয়ায় অংশ নেয়নি খুলনা। তবে সেবার যুক্ত হয় নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২০১৬ সালে চতুর্থ আসরে খুলনা টাইটানস নামে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি যোগ দিয়েছিল। তবে সেবার সিলেটের কোনও দল অংশ নেয়নি। ২০১৭ সালে সিলেট সিক্সার্স ফিরলেও নানা জটিলতায় বাদ যায় বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজি। এ বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ আসরেও বরিশালের কোনও দল ছিল না।