কিট সংকটে সারা দেশ

  • ৫-Aug-২০১৯ ০৪:৫০ অপরাহ্ন
Ads
  • # ডেঙ্গু চিকিৎসায় রাজধানীর ৬ হাসপাতালেই ৩৬ কোটি টাকা, বিনা বেডে দুর্ভোগে রোগীরা


:: জিএম রফিক ::

ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষার উপাদান কিট বা রি-এজেন্ট সংকটে পড়েছে দেশের অধিকাংশ হাসপাতাল। নোয়াখালী, মেহেরপুর, বরগুনা, নওগাঁ, বাগেরহাট, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় কিট ও বেড সংকটে রোগী তাদের স্বজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সুযোগে ব্যবসা ফেঁদে বসেছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। রক্ত পরীক্ষায় সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনার তোয়াক্কা করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। এদিকে গতকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও (ঢাবি) বন্ধ হয়ে গেছে এই সেবা। ঢাবির মতো কোথাও কোথাও সীমিত আকারে এই সেবা চালু থাকলেও কিটের অভাবে তা বন্ধ হয়ে গেছে ওই সব প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে শিগগিরই সংকট কেটে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে গতকালও ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩। এনিয়ে সারা দেশে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে বলে বেসরকারি পরিসংখ্যানের দাবি।

দিন যতো গড়াচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেনো বাড়ছেই। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভিড় করছেন হাসপাতালগুলোতে। ডেঙ্গু শনাক্তে রক্তের যে তিনটি পরীক্ষা করাতে হয় এর মধ্যে এনএস-১ অন্যতম।  কিন্তু অতিরিক্ত রোগীর চাপে ইতোমধ্যেই এনএস-১ পরীক্ষার রি-এজেন্ট সংকটে পড়েছে রাজধানীসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো। বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এনএস-১ অপ্রতুলতায় চিকিৎসা প্রায় বন্ধের পথে। যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে সাধ্যমতো চেষ্টার কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঔষধ প্রশাসন অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ইসমাইল হোসেন ভোরের পাতাকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত কিট মজুদ আছে। ইতোমধ্যেই জেলা পর্যায়ে চাহিদা মতো এই কিট পাঠানো হচ্ছে। জেলার মাধ্যেমে উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রকোপ কমতে থাকলেও আক্রান্তদের সুচিকিৎসার জন্য রাজধানীর ছয়টি হাসপাতালের জন্য বাড়তি ৩৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা নিয়েছে  স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ টাকায় শুধু ওষুধ কেনা হবে না, ডেঙ্গু রোগী ও রোগীদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের চাপ সামলাতে হাসপাতালের নিরাপত্তাসেবা কেনার জন্যও ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া ব্যয় হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ও পথ্য কেনার জন্য।

এদিকে জয়পুরহাটে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হলে গতকাল সোমবার শারমিন আক্তার নামে এক আবহাওয়াবিদের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অথৈ সাহা (১১) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অথৈ সাহা বোয়ালমারী পৌর সদরের কামারগ্রামের কানাই সাহার মেয়ে ও অল-ব্রাইট প্রি-ক্যাডেট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। 

স্বাস্থ্য অধিদফতর সর্বশেষ বলছে, ঢাকায় এডিস মশার ঘনত্ব ৩৬ থেকে বেড়ে এখন ৪৮৭ তে পৌঁছেছে। জরিপ বলছে, বর্ষা শুরুর আগে ঢাকায় প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশার ঘনত্ব ছিল ৩৬টি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৮৭টি। বর্ষার আগে ৩ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত জরিপে সেই ঘনত্ব ছিল ৩৬টি। আর সর্বশেষ জরিপটি হয় ১৭ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। ঢাকা দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থান থেকে এই জরিপের নমুনা নেওয়া হয়।
সারা দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে ভোরের পাতা প্রতিনিধিদের প্রতিবেদন থাকছে এবার।

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত দশ দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০জনে। এই জ্বরে জেলায় মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ২। নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১২০জন রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৪ জন চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে চিকিৎসারত আছেন ৪৬জন। রোগীর আত্মীয়-স¦জনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় নতুন করে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। স্থান সংকটের কারণে বারান্দায় কিংবা মেঝেতে রেখে চলছে চিকিৎসা। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে নার্স ও ডাক্তাররা। তাদের অভিযোগ, ভর্তির পর থেকে দুই একটি স্যালাইন ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না তারা। মিলছে না প্রয়োজনীয় ওষধ ও খাবার। কিনে আনতে হচ্ছে বাহির থেকে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার খোলা হলেও বেড এবং ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সংকট রয়েছে। রোগীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাসপাতাল ২৫০ শয্যার। এখানে বরাদ্দ আসে সেভাবে। তবুও আমরা ডেঙ্গু রোগীদের সাধ্যমত ওষধ ও অন্যান্য সুবিধার ব্যাপারে সজাগ আছি।’

মেহেরপুর: মেহেরপুরেও ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের কিট সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার সদর ও দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে। ঈদের ছুটিতে রাজধানী থেকে অনেকে গিয়েছেন সেখানে। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। ফলে অতিরিক্ত কিট সরবরাহ করা না হলে বড় ধরনের ঝুঁকি আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আরএমও এস এম এহসানুল কবীর আল আজিজ জানান, ৩দিন আগে আমাদের হাসপাতালে ৪০ টি কিট এসেছিল। এই কদিনে ২০ মতো ফুরিয়ে গেছে আর ২০টি হয়তো আছে। আসন্ন ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে মানুষ বাড়ি ফিরলে আমাদের হাতে যে পরিমাণ কিট আছে তা খুবই অপ্রতুল। তবে সারা বাংলাদেশেই স্থানীয়ভাবে সব হাসপাতালকে কিট কেনার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এর প্রক্রিয়া চলছে বলে জেনেছি। গাংনী হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সজিব উদ্দিন স্বাধীন জানান, আমরা ৪০টি কিট পেয়েছিলাম। যা চাহিদা থেকে অনেক কম। মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেজওয়ান আহম্মেদ জানান, এখন আমার কাছে ১৯টি কিট আছে।  ঈদের ছুটির সময় কী পরিমাণ রোগী হতে হাতে পারে তা তো বলতে পারছি না। তবে এটা বলা যায় যে কিট আছে তা অপ্রতুল। যদিও মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন ভোরের পাতাকে জানিয়েছেন, আমাদের উপজেলা পর্যায়ে যে পরিমাণ কিট আছে তা দিয়ে আমরা আসন্ন সমস্যা মোকাবিলা করতে পারবো। 

নওগাঁ: নওগাঁ সরকারি হাসপাতলে ডেঙ্গু পরীক্ষায় পর্যাপ্ত কিট না থাকায় ভোগান্তিতের পড়েছেন রোগীরা। আবার কিট এনএস-১ যে কয়েকটি আছে কিন্তু নেই সরঞ্জামাদি। ফলে ‘আইজিজি ও আইজিএম’ পরীক্ষার জন্য বাহিরের ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে রোগীদের। সেখানে ডেঙ্গু পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। নওগাঁ শহরের হাট-নওগাঁ মহল্লার সাহেরা বিবি বলেন, ‘গত কয়েক দিন থেকে জ্বরে ভুগছিলাম। নওগাঁ সদর হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানো হলে দুইটি পরীক্ষা দেন। বাহিরের ক্লিনিকে ‘সিবিসি ও এনএস-১’ পরীক্ষা করালাম ৯০০ টাকা দিয়ে। এখনো রিপোর্ট হাতে পাইনি।’ নওগাঁর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম ভোরের পাতাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী সনাক্তকরণে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ‘এনএস-১’ ১০৬টি নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে ২০টির রয়েছে।  এই সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। ডেঙ্গু রোগ নির্নয়ে আরো যে যন্ত্র ‘আইজিজি ও আইজিএম ডিভাইস’ লাগবে সেগুলোর জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় চাহিদা পাঠানো হয়েছে।  রোববারের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলে জেনেছি।

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরণখোলায় ডেঙ্গুতে উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামের সৌদি প্রবাসী ধলু মোল্লার স্ত্রী খাদিজা বেগমের (৪২) মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন আরো দুজন। এনিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খাদিজার জামাতা মো. রায়হান জানান, গত এক সপ্তাহ পূর্বে জ্বর হলে খাদিজা বেগমকে প্রথমে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ, আদ্ব-দীন হাসপাতাল ও শেষে শনিবার ভর্তি করা হয় খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু কোনোখানেই সুচিকিৎসা না পেয়ে গতকাল সোমবার ভোর ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।  উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জামাল মিয়া শোভন জানান, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার খাদা গ্রামের টিপু হাওলাদার (৫৪) নামে এক ব্যাক্তির ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। টিপু গত চারদিন পূর্বে জ্বর নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। এছাড়া গত শনিবার উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামের জামাল পাহলানের স্ত্রী জোবায়দা বেগমের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি এখন অনেকটা সুস্থ রয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান, ডেঙ্গুতে তিনজন আক্রান্তের খবর তিনি জেনেছেন। জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের জন্য ল্যাব চালু ও কিট সরবরাহের চেষ্টা করবেন।

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪৬ জন। রোববার পর্যন্ত জেলায় মোট ২৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান। সিভিল সার্জন আরও জানান, বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে আরও ৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। শুরুর দিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা ঢাকা থেকে এসে ভর্তি হলেও বর্তমানে স্থানীয়ভাবেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।  কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশির ভাগ রোগী ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসেছে। আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালে ইতোমধ্যে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতাল এবং জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে।

বরগুনা: বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তকরণ পরীক্ষার এনএস-১ কিট থাকলেও গত তিন দিন ধরে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ফুরিয়ে গেছে এই কিট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ছে রোগী ও তার স্বজনরা। দ্রুত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনএস-১ কিট সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এই সুযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো উচ্চ মূল্যে রক্ত পরীক্ষা করছে। নিরুপায় হয়ে রোগীরা তাদের দিকেই ছুটছেন। অনেকে আবার রক্ত পরীক্ষা করাতে না পেরে বরিশাল অথবা পটুয়াখালীর দিকে ছুটছেন। আঙ্গুরকাটা গ্রামের রোগী তহমিনা বেগম বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের কিট না থাকায় পরীক্ষা করাতে পারছি না। আমতলী পৌর শহরের রোগী সাওদার স্বজন বাকী বিল্লাহ বলেন, আমতলী হাসপাতালসহ তিন-চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খুঁজেও ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত করনের কিট পাইনি।  আমতলী সময় মেডিকেয়ার অ্যান্ড হসপিসের পরিচালক প্রকৌশলী রকিব চৌধুরী রাজু বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত করনের এনএস-১ কিট নেই। গত তিন দিন পূর্বে ঢাকায় অর্ডার দিয়েছি কিন্তু এখনো পাইনি।’ আমতলী উপজেরা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তকরণের এনএস-১ কিট সরবরাহ নেই। বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও নেই। এতে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এনএস-১ পরীক্ষা ছাড়া ডেঙ্গু জ্বর কিনা শনাক্ত করা যায় না। তাই এ পরীক্ষাটা খুবই জরুরি।’ বরগুনা জেলারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন হুমায়ূন শাহীন খান ডেঙ্গু জ্বর শনাক্তকরণে এনএস-১ কিটের খুবই সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এনএস-১ কিটের চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে পেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহের চেষ্টা করা হবে।’

বরিশাল: বরিশালে রি-এজেন্ট বা ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সংকটে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা বন্ধ করেছে সকল সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান। ফলে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা না করতে পেরে আতঙ্কিত বরিশাল অঞ্চলের রোগীরা। ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষায় সরকার ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করে দেওয়ায় অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার লোকসানের অজুহাতে এনএস-১ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সরকারি হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গু শনাক্তকরণ রি-এজেন্ট নেই।

Ads
Ads