আসামে এনআরসি: 'ভারত আশ্বস্ত করেছে, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই'

- ৩-Sep-২০১৯ ০৩:২০ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা এখানে আসাম দিয়ে বিবেচনা করবো না। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আমরা যা পেয়েছি সেটা হচ্ছে, আগামী চার মাসে নাগরিকত্ব বাতিলকৃতদের আপিলের সুযোগ আছে। আর আমরা সাধারণভাবে জানি, ১৯৭১ সালের পরে কোনো বাংলাদেশি ভারতে মাইগ্রেড করেনি। তবে এখন আমাদের নিজেদের ঘাড়ে নিজেদের দোষ চাপানোর কোনো কারণ নেই। এ নিয়ে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো বিষয় এখন পর্যন্ত নেই। এটা লিগ্যাল প্রসেসে শেষ করে সিদ্ধান্ত আকারে আসতে আরও সময় নেবে, কাজেই সেই পর্যন্ত কী দাঁড়ায় আমাদের চিন্তাভাবনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
‘আসামের নাগরিকত্ব বাতিলকৃত ১৯ লাখকে বাংলাদেশি উল্লেখ করে তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানানো হবে’ আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার এই মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব বাতিলকৃতদের মধ্যে ৬০ ভাগই হিন্দু, মুসলামান হচ্ছে ৪০ ভাগ। কাজেই এটার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের এক করে দেখার বিষয় না। তারাতো ভারতেই বাস করছিল, ভারতেরই নাগরিক, আর তাদের এখনই দেশছাড়া করবে এমন সিদ্ধান্ত এখনই ভারত সরকার নেয়নি। কাজেই আমরা আগেভাগে কেন বিষয়টা নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্নের মধ্যে থাকবো।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়টা হলো মিয়ানমার তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে, সেটাও আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে যাচ্ছি, আমরা মিয়নমার উপরের আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সব উপায় কাজ করছি। ডেট দিয়েও একবার রোহিঙ্গা যায়নি বলে সেটা স্থায়ী হয়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের কূটনৈতিক প্রয়াস আরও জোরদার হবে।
কাদের বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে কিছু কিছু সিদ্ধান্ত আছে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন স্থগিত রাখি। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগস্ট মাস থাকায় আমরা এটা স্থগিত রেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে আমরা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করতে শুরু করবো।
কাদের বলেন, ৮ তারিখের আগে আমরা সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যারা বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে আছেন তারা বৈঠক করবো। এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাটা যাতে নিখুঁত উপায়ে এবং এটা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যকর করা যায় সেই জন্যই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ করছি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অতীতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে আমরা ডিসিপ্লিন ব্রেক হলে এই প্রবণতা চলতেই থাকবে এবং এটা দলের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসিপ্লিন ভঙ্গ হলে আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হতেই পারে। সাংগঠনিক কার্যক্রমের আমাদের এজেন্ডার মধ্যে আসতে পারে। আমরা সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের নেত্রী যখনই সিদ্ধান্ত নেবেন তখনই আমরা প্রস্তুত।
সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।