মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান দোলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ!

- ১১-Sep-২০১৯ ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
::উৎপল দাস::
সারাদেশে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে উপজেলা নির্বাচনে প্রথমে নৌকা প্রতীক না পেয়ে অভিমানে দলের বিরুদ্ধে নানা কথা বলা আতাউল হক দোলন পরে নৌকার মনোনয়ন বাগিয়ে নেন। এমনকি জয়ী হয়ে আসেন। এরপরই তার নিকট আত্নীয়রা রমরমা মাদকের ব্যবসা শুরু করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় মাদক ব্যবসায়ীরা রমরমা ব্যবসা করে গেলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের সরাসরি বিরোধিতা করেছিলেন সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড থেকে তাকে কয়েকবার সতর্ক করা হলেও তিনি কোনো ধরণের কর্ণপাত করেননি। এক সময়ের বিতর্কিত নেতা যিনি কয়েকটি দল পরিবর্তন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে সরাসরি নৌকার প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী ও শ্যামনগর-কালিগঞ্জ ( একাংশের) তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার আগে ও পরে দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী কাজের জন্য আতাউল হক দোলনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভোরের পাতাকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। তারা বলেছেন, কোনোভাবেই নৌকার বিরোধিতাকারী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষককে কোনো ছাড়্ দেয়ার সুযোগ নেই। ইতিমধ্যেই সারাদেশে ১৫০ জনেরও বেশি আওয়ামী লীগের নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গত শুক্রবার রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলনের আপন ছোট মামা উজ্জল শেখ এবং আপন চাচাতো ভাই শহীদুল্লাহকে মাদক ব্যবসা করার সময় হাতে নাতে ধরে ফেলে। দোলনের আরেক আত্নীয় খাজা মইজ উদ্দিনের বরফকল থেকে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। রাতভর থানা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের মামা ও চাচাতো ভাইকে ছাড়িয়ে নিতে নানা ধরনের তদবির করেও কাজ হয়নি। দিকে গোডাউন মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত উজ্জ্বল শেখ রমজান নগর ইউনিয়নের মান্নান শেখ এবং শহীদুল্লাহ শ্যামনগর ইউনিয়নের নকিপুরের মৃত খাজা নাজিমুদ্দিনের ছেলে। সমস্ত পত্র পত্রিকায় যখন এটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় তখন শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন নিজ আত্মীয়দের পরিচয়ে নিজের দোষ ঢাকতে ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেন তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের নিজে থেকে ধরিয়ে দিয়েছেন। তার এমন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সম্বলিত পোস্টটি দেখে শ্যামনগর থানার উপ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম নিজের আইডি থেকে পোস্ট দেন, " সারা রাত জেগে কঠোর পরিশ্রম করে ২৩ বোতল ফেন্সিডিল সহ আসামী ধরার পরে যখন অন্য কেউ ক্রেডিট নিতে চায় তখন খারাপ লাগে, কষ্ট পাই। মাদক ব্যবসায়ীদের সমর্থন করা বন্ধ করুন।" স্বয়ং উপজেলা চেয়ারম্যানের এমন মিথ্যাচারে হতবাক উপজেলার আপামর জনসাধারণ। বিষয়টি রীতিমতো হাস্যকর। যারা দর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে তাদের যখন পুলিশ গ্রেফতার করলো তখন উপজেলা চেয়ারম্যানের আত্মীয়তার কারনে যেন সম্মান হানী না হয় তখন তিনি নিজেকে বাঁচাতে এমন মিথ্যাচার করছেন। এটি একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে কখনই কাম্য নয়।