সরকারের টাকার কোনো অভাব নেই: অর্থমন্ত্রী

- ১২-Sep-২০১৯ ০২:২৮ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
বাংলাদেশ সরকারের টাকার অভাব নেই জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমি আপনাদের বলছি টাকা থাকার একটা বেঞ্চ মার্ক আছে। সেই বেঞ্চ মার্কের উপরে আমাদের এখন ৯২ হাজার কোটি টাকা বেশি রয়েছে। এটা তো লুকোচুরি করার কোনো ব্যাপার নয়।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক জোবিদা খেরাস অ্যালাওয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের অর্থের সংকট নেই। এটা একটা নিউজ পেপারে বলছে, এর বিপরীতে এরা কিছু বলবে না। আজ আবার দেখলাম এরা এডিবি’র পজেটিভ রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছে, এটা দেখে আবার অবাক হয়ে গেলাম। তারা পজেটিভলি লিখেছে। আমি বলছি, আমাদের কোনো রকম টাকার অভাব নেই।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি আপনারা কোথাও কোনো ব্যাংকে গিয়ে টাকা না পান, যদি এলসি স্যাটেলমেন্ট করতে না পারেন, যদি পেমেন্ট না করতে পারেন তবে আমাকে এসে বলবেন। তাহলে এগুলো আমরা কীভাবে বিশ্বাস করবো।
প্রশ্ন রেখে তিনি আরো বলেন, সরকার কোথায় টাকা খুঁজছে? সরকার টাকা খুঁজলে কোথা থেকে পাবে? সরকারের টাকা না থাকলে দেয়ার কোনো ব্যবস্থা আছে। আপনারা কেউ সরকারকে টাকা দেবেন?
অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকা তোলার রাস্তাটা কি? সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট বিক্রি করতে হবে, না হলে আমেরিকা যা করে কোয়ানটিটি বেইজিংয়ের নাম করে টাকা ছাপাতে হবে।
সাংবাদিকরা দেশের পুঁজিবাজারের পতন সম্পর্কে জানতে চান অর্থমন্ত্রীর কাছে। মুস্তফা কামাল জানান, 'এ থেকে উত্তরণে বিশ্বব্যাংক কাজ করছে। বন্ড মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেটে কাজ করছে। ব্যাংকিং খাতে যে পরামর্শ দেওয়ার দরকার, তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।' আর এগুলো সংশোধনে সরকার কাজ করছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি যেসব কোম্পানি ভালো করছে, তাদের পুঁজিবাজারে দেওয়ার চেষ্টা করব। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পজিটিভলি আলাপ করেছি। বিশ্বব্যাংক আরও ভালোভাবে উন্নয়নকাজে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে এটা নির্ভর করে আমাদের ক্যাপাসিটির ওপরে। আমাদের ক্যাপাসিটি আরও বৃদ্ধি করতে হবে।’
উল্লেখ্য, 'টাকার খোঁজে সরকার' শিরোনামে একটি পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ খবরে বলা হয়েছে, খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। ব্যয়ের খাত কেবল বড়ই হচ্ছে অথচ আয়ে আছে বড় ঘাটতি। ব্যয়ের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই সরকারের কাছে। বরং টাকার সংকটে আছে সরকার। সরকার পরিচালনার খরচ বেড়েছে। বাড়ানো হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ায় সুদ পরিশোধ ব্যয়সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আকার বাড়ছে উন্নয়ন ব্যয়ের। আরও আছে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের বিপুল আগ্রহ।
প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়, সব মিলিয়ে সরকারের ব্যয়ের তালিকা দীর্ঘ। কিন্তু রাজস্ব আয়ের বাইরে সরকারের জন্য অর্থের উৎস হচ্ছে ঋণ নেওয়া। এ ঋণ এখন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে সরকার অর্থ সংস্থানের নানা উপায় খুঁজছে। যেমন- স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার অলস অর্থ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন, মহাসড়ক থেকে টোল আদায়, টেলিকম কোম্পানির কাছ থেকে চাপ দিয়ে অর্থ আদায় ইত্যাদি। সরকার এখন যেকোনো ভাবে অর্থ পেতে যে মরিয়া, এটি তারই প্রমাণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।