প্রয়োজনে নিজে থানায় গিয়ে ওসিগিরি করব: ডিএমপি কমিশনার

- ১৫-Sep-২০১৯ ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘থানায় গিয়ে অপরাধের শিকার মানুষ যেন হয়রানি ছাড়া জিডি বা মামলা করতে পারে সেই ব্যবস্থা করব। থানা থেকে ফেরার পথে যেন মানুষের মধ্যে এ আস্থা জন্মায় যে, “আমি সম্পদ ও সম্মান ফিরে পাব”—এই একটা বিশ্বাস নিয়ে সে যেন ফেরত আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘থানাকে জনমুখী করতে, প্রয়োজনে নিজে থানায় গিয়ে ওসিগিরি করব। আমি সিনিয়র অফিসারদের বলেছি, তাঁরা থানায় বসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন।’
দায়িত্ব নেওয়ার পর রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। মূলত মহানগরের থানাগুলোর পরিবেশ এবং ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে কথা হয়। প্রশ্ন ওঠে, ঢাকার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) ঘুরেফিরে ঢাকাতেই থাকছেন। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগও রয়েছে। তার পরও পুলিশের ডিসি ও এডিসিদের বদলি করা হলেও তাঁদের বদলি করা হয়নি। এসব প্রশ্নের জবাবে তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন ডিএমপি কমিশনার।
শফিকুল ইসলাম জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ডিএমপির সব ওসিকে ডেকেছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছে, থানায় কোনো পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে কেউ যদি অন্যায় আচরণের শিকার হন, তবে তাঁকে রক্ষার কোনো চেষ্টা ডিএমপি কমিশনার করবেন না।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘নিরপরাধ মানুষ যাতে হয়রানি ও চাঁদাবাজির শিকার না হয়, সেই চেষ্টা করব।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় ওসির দায়িত্ব জেলা শহরের চেয়ে আলাদা। জেলা শহরে রাত ১০টার পর তেমন কোনো কাজ থাকে না। এখানে রাত দুটো পর্যন্ত ওসিকে কাজ করতে হয়। তিনি বলেন, থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) আছেন। এখন তাঁদের ওসি হিসেবে কোথাও কোথাও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
সাংবাদিকেরা রাজধানীর লালবাগের একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের ঘটনা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ওই ঘটনার পর ডিসিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু ওসিকে তাঁর পদে বহাল রেখে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে নতুন ডিএমপি কমিশনারের কথা, ‘কার দায় কতটুকু, তা বিবেচনা করা হয়েছে। আমি কাগজপত্র দেখব।’
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আসে রাজধানীর ট্রাফিক প্রসঙ্গ। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সকালে ও বিকেলে অফিস ছুটির সময় ট্রাফিকের ডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। সার্জেন্ট ও টিআইদের ওপর শুধু দায়িত্ব না দিয়ে এসব কর্মকর্তা যেন মাঠে থাকেন, তা নিশ্চিত করা হবে।
মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এককভাবে পুলিশের দায়িত্ব না। তবে আমাদের চেষ্টা যেন দৃশ্যমান হয়, সেটা নিশ্চিত করা হবে।’
রাজনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিচয় দেখে কখন কে কী করেছে বলুন, কখন কী করা হয়েছে বলুন? পুলিশ আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করে।’
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় হেলমেটধারীদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতন প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য, ‘তদন্ত রিপোর্ট দেখি আগে। অনেক পুরোনো বিষয়।’
আজকের সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।