ক্যাসিনো থেকে নেপালিদের পালাতে সহায়তা করায় ২ পুলিশ বরখাস্ত

- ২৬-Sep-২০১৯ ০১:১২ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে নেপালি নাগরিকদের পালাতে সহায়তার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যের মধ্যে দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়শনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এ মতবিনিময় হয়।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া পুলিশের দুই সদস্য ডিএমপিতে কর্মরত। তাদের একজন ডিএমপির সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) মিঠু ও রমনা থানার কনস্টেবল দীপঙ্কর চাকমা। আরেক জনের নাম জানা যায়নি। তার বিষয়ে অনুসন্ধান চালছে।
রবিবার বিকালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপি মতিঝিল বিভাগ। ক্লাব থেকে ১৬টি ডিজিটাল ক্যাসিনো বোর্ড, তাস খেলার বিপুল পরিমাণ সামগ্রী, জুয়া খেলার সামগ্রী এবং মাদকদ্রব্য (মদ, সিসা) উদ্ধার করা হয়। এদিন মোহামেডান ছাড়াও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব ও আরামবাগ ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়।
মোহামেডানে ক্যাসিনো চালাতেন ১৩ নেপালি। যাদের প্রত্যেকের ডলারে বেতন দেয়া হতো। মাসে যার পরিমাণ ছয় লাখেরও বেশি। জানা গেছে, এই ১৩ নেপালি নাগরিকের মাসিক বেতন ৬০০ ডলার (৫১ হাজার ৩০০ টাকা) থেকে শুরু করে ১ হাজার ডলার (৮৫ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। প্রতিমাসে এই ১৩ নেপালি নাগরিককে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকার বেতন দিত মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলের আরও দুটি ক্লাব ও গুলিস্থানের একটি ক্লাবে হানা দেয় র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমান নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ক্যাসিনো বোর্ড, মাদক উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় ১৮০ জনকে। তাদেরকে ছয় ও একবছর মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
অভিযান চলাকালে পুলিশের তিনসদস্য রাজধানীর বিভিন্ন ক্যাসিনো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ১৯ নেপালিকে পালাতে সাহায্য করেন বলে জানা যায়। তারা সেগুনবাগিচা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। সিসিটিভি ফুটেজে পালানোর দৃশ্য ধরা পড়লে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনজনের একজন হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাগ উপরে উঠার সময়ে তার হাতে ছিল না। এর কিছুক্ষণ পরে ওই ফ্ল্যাটে গেস্ট পরিচয় দিয়ে আরও কয়েকজন নেপালি ঢোকেন।
ফ্ল্যাট থেকে রাত ৩টার কিছু আগে একে একে বেরিয়ে যান ১৯ নেপালি। ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মামুন বলেন, ‘সাদা পোশাক পরিচয় দেয়া পুলিশ যাওয়ার পর কয়েকজন এ ফ্ল্যাটে আসেন। এরপর তারা রাতে একসঙ্গে বেরিয়ে যান।’
রাজধানীতে ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। বলেন, ঢাকায় ক্যাসিনো পরিচালনার ক্ষেত্রে যদি কোনও পুলিশ সদস্য লাভবান হওয়ার তথ্য ও অভিযোগ ওঠে তবে তদন্ত করা হবে। তদন্তে প্রমাণ হলে প্রচলিত বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।