তারেক জিয়ার ইয়াবা সাপ্লাইয়ার কুতুব যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদ পাচ্ছেন

- ৩-Oct-২০১৯ ১২:৪১ অপরাহ্ন
:: উৎপল দাস ::
ছাত্রজীবনে শিবির পরিচালিত ফুলকুড়ি করে, কলেজে এসে ছাত্রদলের কলেজের নেতা, লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে পুরোদোস্ত যুবদল নেতা। এভাবেই কেটেছে কক্সবাজার শহরের বইল্যাপাড়া এলাকার কুতুব উদ্দিনের রাজনীতির প্রথম দশটি বছর। শিবির, ছাত্রদল ও যুবদল ঘুরে কুতুব এখন কক্সবাজার শহর যুবলীগের সিনিয়র নেতা। কয়েকদিনের ভেতর হয়ে যাবেন জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদকও। কক্সবাজার জেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে কুতুব উদ্দিনকে দপ্তর সম্পাদক পদে রেখে পূণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য দেয়া হয়েছে। এই কুতুব উদ্দিন কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা সুজন হত্যার সাথেও জড়িত।
কুতুব উদ্দিন গত কয়েক বছর ধরে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কক্সবাজার শহর যুবলীগের আহবায়ক শোয়েব ইফতেখারের হাতধরে যুবলীগের নাম লিখান। ২০০১-২০০৯ এই সময় কক্সবাজার শহর যুবদলের নেতা ছিলেন। কাজে কর্মে পটু হওয়ায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার হাতধরে তারেক জিয়ার বন্ধু ইঞ্জিনিয়ার রুমী আখতার হোসেনের র্যাংগ্যস গ্রুপের কক্সবাজার প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় তারেক জিয়া যতোবার কক্সবাজারে এসেছে যতোবারই কুতুব উদ্দিন তারেকের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তারেকের বন্ধু রুমি নির্দেশে কুতুব তারেককে মদ ও ইয়াবা সাপ্লাই দিতো। সেই সময় ইয়াবা তেমন সহযলভ্য ছিলোনা। কুতুব তার বন্ধু টেকনাফের ইয়াবা কিং সাইফুল করিমের (কিছুদিন আগে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত) ইয়াবা এনে তারেক জিয়াকে দিতো।
সূত্র জানিয়েছে, তারেক জিয়া কক্সবাজারে আসলে রাতের বেলা হোটেলে জলসা বসাতো। সেই জলসায় গান গাইতো কুতুব উদ্দিনের বান্ধবী ফারহানা। কক্সবাজারে তারেক জিয়াকে নেচে গান গেয়ে মনোরঞ্জন করতো ফারহানা। তারেক জিয়ার অনুরোধে দেশের প্রথম বেসরকারি টেলিভিশনের বাংলার গানের প্রতিযোগীতায় "তারকাদের তারকা" অনুষ্ঠানে ২য় স্থান পায় কুতুবের বান্ধবী ফারহানা।
২০১০ সালে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে র্যাংগ্যস থেকে কুতুবকে বহিষ্কার করা হয়।
কুতুব উদ্দিন কক্সবাজার শহর ছাত্রলীগ নেতা সুজন বড়ুয়া হত্যার সাথেও জড়িত। সুজন হত্যার দিন কুতুব খুনিদের সুজন বড়ুয়ার অবস্থান ও গতিবিধি জানিয়ে ছিলো। কুতুবই খুনিদের সুজন বড়ুয়াকে দেখিয়ে দিয়েছিলো।
র্যাংগ্যসের চাকরি হারানোর পর কুতুব টেকনাফের যুবদল নেতা হাজী সাইফুলের ইয়াবা লিংক দিয়ে গত ১০বছর ইয়াবার ব্যবসা করে গেছে। কক্সবাজার শহরের উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের কুতুব তার বাহিনীর মাধ্যমে ইয়াবা সরবরাহ করতো। গত কিছুদিন আগে কুতুবের ইয়াবা বাহিনীর প্রধান রফিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে ইয়াবা ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে রফিককে হত্যা করা হয়। এই হত্যার ইন্দনের পেছনে কুতুব জড়িত থাকার সন্দেহ করছে পুলিশ।
এসব বিষয়ে কুতুব উদ্দিন বলেন, তিনি ছাত্রদল বা শিবিরের অথবা ফুলকুড়ির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা। তিনি কখনও যুবদলও করতেন না। তার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড প্রতিবেদককে যাচাই করার কথা বলে বর্তমানে শহর যুবলীগের দায়িত্বে আছেন বলে দাবি করেন। তারেক জিয়ার বন্ধুর কোম্পানীতে চাকরির কথা স্বীকার করে বলেন, র্যাংগ্যসের এমডির উপহার দিতে একবার হোটেল সি গার্লে তারেক জিয়ার সাথে তার দেখা হয়। এর বাইরে তার কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে, জেলা যুবলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারে বলেও জানান এই কুতুব উদ্দিন।
নিহত ইয়াবাকারবারী রফিকের সাথে তার সখ্যতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা পাশাপাশি বাসায় থাকতাম। সে সুবাধে তারসাথে আমার জানাশোনা রয়েছে। সে সূত্রে রফিক যদি আমার ছবি সহ পোষ্টার ছাপালে আমি কি করতে পারি ?