হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত ৭ চুক্তি, ৩ প্রকল্প উদ্বোধন

- ৫-Oct-২০১৯ ১০:০১ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
নয়া দিল্লিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে; উদ্বোধন হয়েছে তিনটি যৌথ প্রকল্প।
শনিবার (০৫ অক্টোবর) দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে এসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়। যৌথভাবে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন
বৈঠকের সই হওয়া সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির মধ্যে রয়েছে-
১. ভারতে পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক চুক্তি সম্পর্কিত একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর)।
২. উপকূলে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থার (কোস্ট্যাল সারভাইল্যান্স সিস্টেম-সিএসএস) বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের মধ্যে সমঝোতা।
৩. ত্রিপুরায় সাবরুম শহরে খাবার পানি সরবরাহ প্রকল্পে ফেনী নদী থেকে থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা।
৪. যুব উন্নয়নে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ভারতের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা।
৫. বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি বিষয়ে চুক্তি নবায়ন।
৬. হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই।
৭. ভারত থেকে নেওয়া ঋণ বাস্তবায়ন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি।
সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সইয়ের পর দুই প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন- খুলনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইনজিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিআইপিএসডি); রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকায় বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন ও বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনী বক্তেব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভারতে আমন্ত্রণের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকারের আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশে নির্মিত রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ ভবন ছাত্রাবাসের শুভ উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। রামকৃষ্ণ মিশন বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন খাতের উন্নয়নেও এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ওই অঞ্চলের ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ধরনের সেবা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ভূমিকা রাখবে। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিন শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিআইপিএসডিআই এ অঞ্চলের নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি রপ্তানির সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। এর ফলে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জ্বালানি চাহিদা পূরণ সহজ হবে।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হায়দ্রাবাদ হাউসে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। বিকেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশটির রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
বিকেলে সফরকালীন আবাসস্থল হোটের তাজমহলে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ দেবে এশিয়াটিক সোসাইটি। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি।
এর আগে, শুক্রবারও (৪ অক্টোবর) ভারত-বাংলাদেশ ব্যবসায়িক ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ এও বং টেক-মাহিন্দ্রা; বাংলাদেশ ইকোনোমিক জোনস অথোরিটি ও আদানি পোর্টস ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
সফরের শেষ দিনে রোববার (০৬ অক্টোবর) বেশ কিছু কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শেষে রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
/কে