যে ইস্যুতে ৭ দিনের মধ্যেই শেখ হাসিনার তোপের মুখে পরতে পারেন জয়-লেখক!

- ১১-Oct-২০১৯ ১২:২৯ অপরাহ্ন
::উৎপল দাস::
আর মাত্র ৭ দিন পার হলেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তোপের মুখে পরতে পারেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। ছাত্রলীগের ২৯৯ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দেয়ার বিষয়টি এখনো ঝুলে থাকায় তারা চাপে পরতে পারেন বলে জানা গেছে। প্রায় ১ মাসের মতো সময় তারা পার করলেও পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মতোই বিতর্কিতদের সাথে নিয়ে কিভাবে রাজনীতি পরিচালনা করছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগে তিনজন চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ে আবারো ভাবতে হচ্ছে বলে মনে করেন সংগঠনের সংশ্লিষ্টরা। এমনকি বর্তমান পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৪০ জনেরও বেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে বলে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসেছে। এমনকি তাদের মধ্যে অনেকে বয়সোর্ত্তীণ, মাদক ব্যবসায়ী, বিবাহিত, পরিবার বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর থেকেই এ বিষয়ে আন্দোলন হলে চাপের মুখে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং গোলাম রাব্বানী ১৯ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। সেই তালিকা থেকে অনেকেই নিজেদের নিদোর্ষ প্রমাণের জন্য প্রমাণাদি তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ৪ নেতার কাছে জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৫ জন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
ছাত্রলীগের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই ২৯ জন বিতর্কিত নেতার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যেকোনো সময় তাদের পদ শূণ্য ঘোষণা করা হতে পারে। এক্ষেত্রে কারা কারা বাদ পরতে পারেন সেই তালিকাতে যেন আদর্শিক ছাত্রলীগ নেতারা বাদ না পরেন সেদিকে খেয়াল রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। বারবার তদন্ত করা হচ্ছে বলা হলেও দীর্ঘ সময় পরও বিতর্কিতদের বাদ দেয়ার বিষয়ে তেমন কোনো ফলাফল দেখা যায়নি। ফলে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও কেন বিতর্কিতদের নিয়েই রাজনীতি করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এদিকে, এখন পর্যন্ত মোট ৬২ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যম অভিযোগ উঠে এসেছে। তাদের বাদ দিলেই ছাত্রলীগের সাময়িক কলংকমুক্তি ঘটবে বলে মনে করেন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। তারা মনে করেন, শেখ হাসিনার পছন্দের ছাত্রলীগের কমিটিতে যারা বিতর্কিতদের পদ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কেননা তারা ছাত্রলীগে নিজেদের পছন্দের এবং অসাংগঠনিক লোক বসিয়েছেন, এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। কারণ ছাত্রলীগের আদর্শের সাথে এটি কখেনোই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ছাত্রলীগের কয়েকজন শীর্ষ সাবেক নেতার সঙ্গে সাময়িক এই সমস্যা সমাধানের উপায় কি হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন ভোরের পাতার এ প্রতিবেদক। তিনজন সাবেক প্রভাবশালী নেতা এক কথায় বলেছেন, শোভন রাব্বানী ছাত্রলীগে বিতর্কিতদের ঠাঁই দিয়ে সংগঠনের হারানো ঐতিহ্যকে লুণ্ঠন করেছেন। তবে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মূল দায়ী হলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪ নেতা এবং শোভন রাব্বানী। প্রাণের ছাত্রলীগের এই অবস্থা সৃষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এমনটা প্রত্যাশা করেন সাবেক অনেক ছাত্রলীগ নেতা। কারণ তারা সবাই শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোসহীন, তাই ছাত্রলীগকে কলংকমুক্ত দেখতে চান। ফলে জয় লেখককে আগামী ৭ দিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান করতে না পারেন দায়িত্ব নিয়ে তাহলে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগেরও সম্মেলন দিয়ে দিতে পারেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।