রহস্যময় এক নাম এনায়েতুর রহমান বাপ্পী, যিনি দেশের ব্যাংকিং খাতের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি!

- ২০-Oct-২০১৯ ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
ব্যবসা ও মিডিয়া জগতের রহস্যময় নাম এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। সব সরকারের সময়েই তিনি প্রভাবশালী। সপরিবার থাকেন সিঙ্গাপুরে, জীবনযাপন রাজসিক। শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ তার। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলেরও মালিক তিনি। সব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি একজন ঋণখেলাপি।
ব্যাংকারদের ভাষায়, এনায়েতুর রহমান বাপ্পী দেশের ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর দাবি, তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি নন। তিনি জানান, ব্যাংকারদের অসহযোগিতা ও চলতি মূলধনের অভাবে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবি ব্যাংক তিন বছর ধরে আমাদের এলসি সুবিধা দেয়নি। পৃথিবীর সেরা মেশিনারিজ এনে কারখানায় স্থাপন করেছি। বিল্ডট্রেডের তিন প্রতিষ্ঠানই আমার সন্তানের মতো। কিন্তু ব্যাংকারদের কারণে আজ এ সন্তান অন্যের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।
বিল্ডট্রেড এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর শিল্প গ্রুপের নাম। এ গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠান হলো বিল্ডট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, বিল্ডট্রেড ফয়েলস লিমিটেড ও বিল্ডট্রেড কালার কোট লিমিটেড। এ তিন কোম্পানির ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকাই এবি ব্যাংক লিমিটেডের। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের রয়েছে ৯২ কোটি টাকা। ৬৭ কোটি টাকা রয়েছে ব্যাংক এশিয়ার। বিল্ডট্রেড গ্রুপের এসব ঋণই বিভিন্ন সময়ে খেলাপি হয়েছে। দীর্ঘ সময় খেলাপি থাকার পর সম্প্রতি এবি ব্যাংকের ঋণটি পুনঃতফসিলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণটি পুনঃতফসিল হয়েছে পাঁচবার।
সর্বশেষ পুনঃতফসিলের পর এখনো কোনো কিস্তি পরিশোধ করা হয়নি। চারবার পুনঃতফসিলের পরও খেলাপি হয়ে গেছে ব্যাংক এশিয়ার ঋণ। এখন বিশেষ সুবিধার আওতায় পঞ্চম দফায় পুনঃতফসিলের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর মালিকানায় রয়েছে ‘চ্যানেল ৯’। বড় বাজেট নিয়ে ২০১১ সালের ৮ এপ্রিল যাত্রা করা চ্যানেলটির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ভার্গো মিডিয়া লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। খেলাপি হয়ে যাওয়ায় ২০১৭ সালে ঋণটি পুনঃতফসিল করা হয়েছিল। যদিও পুনঃতফসিলের পর এখন পর্যন্ত কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। বিল্ডট্রেড ও ভার্গো মিডিয়া মিলিয়ে এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। বিশাল অংকের এ ঋণ আদায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যাংকাররা। বিল্ডট্রেডের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন আশরাফুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী।
আর বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলার বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। ১৯৯৯ সালে বিপণন বিভাগের আর্থিক হিসাব বুঝিয়ে দিতে না পারায় এটিএন বাংলা ছাড়তে হয় তাকে। এটিএন বাংলা ছেড়ে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী বিল্ডট্রেডের পরিচালক পদ নেন। মূল উদ্যোক্তা আশরাফুল ইসলাম মারা গেলে বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালু বিল্ডট্রেডের সঙ্গে যুক্ত হন।
পরবর্তী সময়ে বিল্ডট্রেডের মূল উদ্যোক্তাদের সরিয়ে প্রতিষ্ঠানটির একক কর্তৃত্ব নেন এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। ২০০১-পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ নেন তিনি। ২০০৯ সাল পর্যন্ত তার ঋণের পরিমাণ তিনশ কোটি টাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিল্ডট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ঋণের পরিমাণ ছিল ৯১১ কোটি টাকা। এছাড়া বিল্ডট্রেড ফয়েলস লিমিটেডের নামে ৬৫৭ কোটি এবং বিল্ডট্রেড কালার কোট লিমিটেডের নামে ১৩৮ কোটি টাকার ঋণ ছিল। বর্তমানে সুদসহ এ ঋণের পরিমাণ আরো বেড়েছে। বিশাল অংকের এ ঋণের সিংহভাগই এবি ব্যাংকের।
বর্তমানে বিল্ডট্রেডের কাছে এবি ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তিনটি কোম্পানির নামে থাকা এ ঋণ অনেক দিন থেকেই খেলাপি। সম্প্রতি এবি ব্যাংক বিল্ডট্রেডের সব ঋণই পুনঃতফসিলের উদ্যোগ নেয়।
তবে এখনো ডাউন পেমেন্টের পুরো অর্থ পরিশোধ না করায় পুনঃতফসিল প্রক্রিয়া শেষ হয়নি বলে এবি ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এবি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল আলম এ প্রসঙ্গে জানান, বিল্ডট্রেডের ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ায় পুনঃতফসিল করা হয়েছে। গ্রুপটি ঋণের অর্থ পরিশোধ করবে, এমন প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতেই পুনঃতফসিল করা হয়েছে। আশা করছি, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিল্ডট্রেডের কর্ণধাররা এবি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করবেন। তবে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণেই বিল্ডট্রেড বিপদে পড়েছে বলে অভিযোগ এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর।
তিনি জানান, আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু চলতি মূলধনের অভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদনে যেতে পারছে না। এবি ব্যাংক তিন বছর ধরে আমাদের কোনো এলসি খোলেনি। তাদের অসহযোগিতার কারণে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও বিল্ডট্রেড ফয়েলস উৎপাদনে যেতে পারেনি। অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কার্যাদেশ পেলেও আমরা পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না।
এনায়েতুর রহমান বাপ্পী জানান, বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে আমি ঋণ আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলাম। কিন্তু এবি ব্যাংকের কর্মকর্তারা সে ঋণ ছাড় করেননি। তারা অফশোর ব্যাংকিং কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িয়ে ভীত ছিলেন। এবি ব্যাংকের অভ্যন্তরে কী হয়েছে, তার দায়দায়িত্ব আমার ওপর পড়ে না। বিল্ডট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৭০০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৪৫০ কোটি টাকা এবি ব্যাংককে পরিশোধ করা হয়েছে। সুদ ছাড়া বিল্ডট্রেড ফয়েলসের ঋণ ছিল ৬১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে বিশ্বের সর্বাধুনিক মেশিনারিজ স্থাপন করা হয়েছে। এ ঋণের ওপর এবি ব্যাংক ৩৯৪ কোটি টাকা সুদ আরোপ করেছে।
কত শতাংশ সুদ আরোপ করা হয়েছে—এমন প্রশ্নের উত্তরও এবি ব্যাংক কর্মকর্তারা দিতে পারছেন না। আমি ব্যাংককে এ পর্যন্ত কত টাকা পরিশোধ করেছি, তার হিসাব রেখেছি। বিষয়টি নিয়ে গভর্নর ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি। ২০০৬ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হয় বিল্ডট্রেড।
এর পর থেকে গ্রুপটির চারটি হিসাবের বিপরীতে ৭০ কোটি টাকা অর্থায়ন করে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে সুদসহ এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকায়। দফায় দফায় খেলাপি হয়ে যাওয়ায় বিল্ডট্রেডের ঋণ এ পর্যন্ত পাঁচবার পুনঃতফসিল করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। সর্বশেষ ২০১৯ সালের মার্চে বিল্ডট্রেডের ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়। পুনঃতফসিলের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত এক টাকাও পরিশোধ করেননি এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। এর মধ্যেই ঋণের বেশ কয়েকটি কিস্তি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধ করা না হলে আবারো বিল্ডট্রেডের ঋণ খেলাপির খাতায় তুলবে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। চার দফায় পুনঃতফসিল করা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণটি বিশেষ নীতিমালার আওতায় আবারো পুনঃতফসিল করার বিষয়ে মৌখিক প্রস্তাব দিয়েছে বিল্ডট্রেড।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিল্ডট্রেডের কাছে আমাদের ৯২ কোটি টাকার ঋণ আছে। ঋণের এ অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে একাধিকবার ঋণটি পুনঃতফসিল করা হয়েছে। টাকা পরিশোধের পথ সহজ করে দিতেই পুনঃতফসিল সুবিধা দেয়া হয়েছে। আমরা চাই, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী দায়মুক্ত হোন।
বিল্ডট্রেডের কাছে ৬৭ কোটি টাকা আটকা পড়েছে ব্যাংক এশিয়ার। এরই মধ্যে চার দফায় পুনঃতফসিল করা হয়েছে বিল্ডট্রেডের ঋণ। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ঋণটি পুনঃতফসিল করা হয়। যদিও গত দুই বছরে ব্যাংক এশিয়াকে এক টাকাও পরিশোধ করেননি এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। বিল্ডট্রেড গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের ঋণের পুরোটাই এখন মন্দ মানের খেলাপি।
ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, পুনঃতফসিল হলে ঋণের অর্থ পরিশোধ করবেন—এনায়েতুর রহমান বাপ্পী এমন প্রতিশ্রুতি অসংখ্যবার দিয়েছেন। কিন্তু পুনঃতফসিল হওয়ার পর তিনি আর ব্যাংকমুখী হননি। ব্যাংক এশিয়ার কাছে ঋণের জামানত হিসেবে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী রাজধানীর বারিধারার একটি বাড়ি দিয়েছেন। পাশাপাশি বিল্ডট্রেডের কারখানার একটি অংশ ব্যাংক এশিয়ার কাছে জামানত আছে। এখন পঞ্চমবারের মতো ২ শতাংশ সুদে ১০ বছরের জন্য ঋণটি পুনঃতফসিলের আবেদন করেছে বিল্ডট্রেড।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আরফান আলী বলেন, বিল্ডট্রেডের ঋণটি আবারো পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন এসেছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। সার্বিক পর্যালোচনায় যদি উপযুক্ত মনে হয়, তবেই বিল্ডট্রেডের ঋণ পুনঃতফসিল করা হবে। বিল্ডট্রেড গ্রুপের কোম্পানিগুলোর কারখানা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের কালামপুরে। প্রায় ২০০ বিঘা জায়গাজুড়ে বিল্ডট্রেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক।
একসময় বিল্ডট্রেডের প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এখন শ্রমিকের সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে এসেছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ধামরাইয়ের কালামপুরে কথা হয় বিল্ডট্রেডের একাধিক বর্তমান ও সাবেক শ্রমিকের সঙ্গে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, বিল্ডট্রেডের প্রতিষ্ঠানগুলো খুব ভালো ছিল। এখনো প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ও বিপণন ভালো। ভালো মুনাফাও হয়। দেশের শীর্ষ করপোরেটগুলো বিল্ডট্রেডের গ্রাহক। এর পরও হাজার হাজার শ্রমিককে এরই মধ্যে ছাঁটাই করা হয়েছে। তিন বছর ধরে সঠিকভাবে কারখানাগুলো পরিচালনা করা হয়নি। অনেক যন্ত্রপাতিতে জং ধরেছে। শ্রমিকদের এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় এনায়েতুর রহমান বাপ্পীর কথায়ও।
তিনি জানান, ‘আমি তিন বছর অসুস্থ ছিলাম। আমার চোখে ১৪ বার অপারেশন হয়েছে। চোখের ৬০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে ব্যবসায় কিছুটা ছেদ পড়েছে। বিল্ডট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তিন হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিল। এ সংখ্যা এখন ৮০০ তে নেমে এসেছে। বর্তমানের এ পরিস্থিতি ব্যাংকাররা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন।’
ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বিল্ডট্রেডের প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী বলেন, এরই মধ্যে যোগ্য ক্রেতাও পাওয়া গেছে। বিল্ডট্রেডের কারখানাগুলো আমার সন্তানের মতো। দুর্ভাগ্য এ সন্তানগুলো এখন অন্যদের হাতে পরিচালিত হবে। আমি কখনো বিলাসী জীবনযাপন করিনি। শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করার জন্য নিজের গাড়িও বিক্রি করে দিয়েছি।
সপরিবারে থাকেন সিঙ্গাপুরে: স্ত্রী, পুত্র নিয়ে সপরিবারে সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন এনায়েতুর রহমান বাপ্পী। ব্যাংকাররা বলছেন, ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া অর্থের একটি অংশ এনায়েতুর রহমান বাপ্পী সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন। দেশে থাকা তার অন্যান্য সম্পদও সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তিনি পুরো পরিবার সিঙ্গাপুর নিয়ে গেছেন। তবে অর্থ পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী বলেন, হোলি আর্টিজান হামলাটি আমার বাসার পাশেই ঘটেছিল। যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটে সেখানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিশ্চিন্তে বসবাস করা যায় না।
প্রতি মাসেই আমাকে সিঙ্গাপুরে ডাক্তার দেখাতে হয়। পরিবার সেখানে স্থানান্তরের এটিও একটি কারণ। শতকোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দেয়ার অভিযোগও আছে এনায়েতুর রহমান বাপ্পী ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একাধিক মামলাও করেছে।