দুই জাহাজের সংঘর্ষে ট্যাঙ্কার ফুটো হয়ে ১০ টন তেল ছড়িয়ে পড়েছে কর্ণফুলীতে

  • ২৬-Oct-২০১৯ ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
Ads

:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটি সংলগ্ন এলাকায় অপর একটি জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি অয়েল ট্যাংকার ফুটো হয়ে জ্বালানি তেল নদী ও সংযুক্ত খালে ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে ট্যাঙ্কারটি ফুটো হয়ে প্রায় ১০ টন ডিজেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত তার আট টনের মতো (পানিমিশ্রিত তেল) নদী থেকে তোলা হয়েছে বলে দাবি করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তেল ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পেয়ে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ দু’টির মালিককে নোটিশ পাঠিয়েছে।

বন্দরের বেতার নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়, বহির্নোঙর থেকে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সৌরভ’ ডলফিন অয়েল জেটি-৭-এ (তেল খালাসের স্থাপনা) ভেড়ানো হচ্ছিল। এ সময় পাশের স্থাপনায় (রিভার মুরিং-৮) তেল খালাসরত একটি ট্যাংকারের (এমটি ফেং হাই-১৫) রশির সঙ্গে বাংলার সৌরভের নোঙর পেঁচিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর ফেং হাই ট্যাংকারটি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে তেল খালাসের পাইপ ভেঙে যায়। এতে তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল রোববার বিকেল চারটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তখনো নদীতে তেল ভাসছিল।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, কী কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করছে নৌবাহিনী।

চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ দেশ-১ এ ১ হাজার ২০০ টন ডিজেল ছিলো। পদ্মা জেটি থেকে তেল নিয়ে জাহাজটি খুলনা যাবার কথা ছিলো। দুর্ঘটনার পর বন্দরের তেল অপসারণকারী জাহাজ বে ক্লিনার- ১ ও ২ তেল অপসারণে কাজ করছে। তাদের সহযোগিতা করছে কাণ্ডারি-৮, ১০ ও ১১ নামে বন্দরের আরো তিনটি নিজস্ব জাহাজ। জোয়ার-ভাটার কারণে কিছু তেল জাহাজের গায়ে লেগে গেছে। কিছু তেল শাখা খালেও ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা অপসারণের চেষ্টা করছি। এর মধ্যে প্রায় ৮ মেট্রিক টন তেল অপসারণ করা হয়েছে। বাকি তেলও অপসারণ করা হবে।

এদিকে নদীতে তেল ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সংযুক্ত দাশগুপ্তা। তিনি বলেন, ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। পরিবেশ দূষণের আলামত পাওয়া গেছে। দুটি জাহাজের মালিকপক্ষকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের আগামীকাল শুনানির জন্য হাজির হতে বলা হয়েছে।

এভাবে জ্বালানি তেল ছড়িয়ে কর্ণফুলী দূষণে সেখানকার পরিবেশের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইদ্রিস আলী।

তিনি বলেন, পানির উপরিভাগে জ্বালানি তেল ছড়ানোয় তা মাছ, নদীতে থাকা ক্ষুদ্র প্রাণি এবং বাস্তুসংস্থানের মারাত্মক ক্ষতি হবে। যতক্ষণ তেল থাকবে ততক্ষণ জোয়ার-ভাটায় এগুলো নদীতে বারবার আসতে থাকবে। কর্ণফুলী নদীতে বছরে এ রকম দু-চারটা ঘটনা ঘটছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।

Ads
Ads