সংসদে বাদলের সেই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আর শুনতে পারবো না: প্রধানমন্ত্রী

  • ৭-Nov-২০১৯ ০১:৩৭ অপরাহ্ন
Ads

ফাইল ছবি

:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, মঈন উদ্দীন খান বাদল ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান রয়েছে। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শান্তি সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। সংসদে তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলতেন। আমাদের দুর্ভাগ্য তার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমরা আর শুনতে পারব না।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মঈন উদ্দীন খান বাদল কথা বলতেন এলাকার উন্নয়নের জন্য। সব সময় তিনি সক্রিয় ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসীর ক্ষতি হয়েছে। সাথে সাথে রাজনীতির অঙ্গনে আমরা যারা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি, আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, এমনকি সেই আইয়ুববিরোধী আন্দোলন নিয়ে ছয় দফা আন্দোলন, উত্তরা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার আন্দোলন- প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

তিনি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি জাসদে যোগ দেন। আমরা যখন জোট গঠন করি তখন আমাদের সঙ্গে তিনি সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলন, সংগ্রামে, রাজপথে এবং এই সংসদে তার সঙ্গে একসাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। রাজনৈতিক চিন্তা চেতনায় তিনি যথেষ্ট শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যু আজকে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র দুদিন আগেই আমি তার খোঁজ নিয়েছি। তিনি অসুস্থ ছিলেন তার স্ত্রী সবসময় আমাকে মেসেজ পাঠাতেন, খবর জানাতেন। দু’দিন আগেও আমি তার কাছ থেকে মেসেজ পাই। আজকে সকালে যখন খবরটা পেলাম এটা সত্যিই একটি বিরাট ধাক্কা লেগেছিল। কারণ আমি ভাবতেই পারিনি আজকে এভাবে মৃত্যুবরণ করবেন তিনি। কারণ পার্লামেন্ট শুরু হবে তিনি আসবেন এবং দ্রুত সুস্থ হতে হবে -এটা তিনি সবসময় চিন্তা করতেন।

তিনি বলেন, আমরা চলার পথে অনেক আপনজন হারিয়েছি। অবশ্য সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে, আমাদের যেমন জন্ম তেমনি মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়। এটাই সত্য কিন্তু এই সত্য মেনে নেয়া কঠিন, তবে আমাদের মানতেই হয়।

মঈন উদ্দীন খান বাদলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, তার লাশ নিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমাদের হাইকমিশনার থেকে একজন কর্মকর্তা সেখানে পাঠিয়েছি।

মরহুম বাদলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, তার বক্তব্য আমরা মন দিয়ে শুনতাম। তার থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল, অনেক কিছু জানার ছিল।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে সংসদ কার্যক্রম পরিচালনাসহ আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বয়সে আমার ছোট হলেও দীর্ঘদিনের পুরনো কর্মী ও সহযোগী। জন্মলগ্ন থেকেই তিনি জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমার সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবিরোধী সংগ্রামে তার ভূমিকা রয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন বলেন, সফল মুক্তিযোদ্ধা তিনি। পাকিস্তান বাহিনীর কাছে তিনি আতঙ্ক ছিলেন। সংসদে তার বাচনভঙ্গি ও দৃঢ়তা আমাদের মুগ্ধ করতো।

শোক প্রস্তাবেরও পর অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আ স ম ফিরোজ, শাজাহান খান, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।

Ads
Ads