মশিউর রহমান রাঙা কি তবে ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিলেন?

- ১১-Nov-২০১৯ ০১:৪৯ অপরাহ্ন
উৎপল দাস
দক্ষিণ এশিয়ায় মাদকের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমদাদুল ইসলাম। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, বাংলাদেশে প্রথম মরণ নেশা ইয়াবার বিস্তার ঘটে ১৯৯৯ সালের দিকে। এর আগে মাদক হিসাবে ফেনসিডিলের প্রচলন ছিল।
তবে আজ থেকে প্রায় ২৫-৩০ বছর পূর্বে এই ফেনসিডিল ছিল কেবলই একটা সাধারণ কাশির ওষুধ। আমাদের এই বাংলাদেশে ফেনসিডিল উৎপাদন বা আমদানির বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান নেই। ফেনসিডিল তৈরি করছে ভারতস্থ ‘রোন-পোলেনক’ নামক একটি ওষুধ কোম্পানি। তবে এটা কাশির সিরাফ হিসেবে যে ওষুধ ব্যবহার হওয়ার কথা সেটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নেশাকর বস্তুরূপে। যদিও উক্ত ‘রোন-পোলেনক’ (বাংলাদেশ) আমাদের দেশে রয়েছে এবং ব্যান্ড মেডিসিন হিসেবে উক্ত ফেনসিডিল প্রস্তুত এবং সরবরাহ করে না।
১৯৮৬ সালের পূর্ব পর্যন্ত আমাদের এই বাংলাদেশে ‘মে এন্ড বেকার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ফেনসিডিল বাজারজাত করত। ১৯৮৬ সালে দেশের জাতীয় ওষুধ নীতির আওতায় এটিকে নেশার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশ সরকার ফেনসিডিল বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
আমি এতকথা বলছি একটা কারণেই, শহীদ নূর হোসেন ইয়াবা-ফেনসিডিল আসক্ত ছিলেন বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। কিন্তু তিনি জানেনই না, ১৯৯৯ সালের আগে বাংলাদেশে তেমনভাবে কোনো প্রচলনই ছিল না। তাহলে এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর পৃথিবীর ক্ষণজন্মা স্বৈরশাসক ( স্বাভাবিকভাবে মরতে পেরেছেন) লে.জে.(অব.) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নিদের্শিত গুলিতে শহীদ হওয়ার আগে নূর হোসেন কিভাবে ইয়াবা পেতেন। সেই ইয়াবার সরবরাহকারী কি তবে আপনি ছিলেন মশিউর রহমান রাঙা? কেননা, শহীদ নূর হোসেন ইয়াবা সেবন করতেন, এ কথা আপনি তখনই জানতে পারবেন, যখন আপনি নিজে তার সঙ্গে সেবন করবেন অথবা তাকে সরবরাহ করবেন। এছাড়া কারো শোনা কথায় যদি আপনি এমন মন্তব্য করতে পারেন না। বাংলাদেশের সড়ক খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের অনুকম্পা আর দয়াতে মন্ত্রিত্বের স্বাদও পেয়েছিলেন। এরপরও কিভাবে শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলেন, এটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে একথা আমরা বলতেই পারি, আপনি একজন দু’মুখো সাপের মতো আচরণ করছেন এবং একসময় ইয়াবার ব্যবসা করতেন! জবাবটা দিন অথবা শহীদ নূর হোসেনের পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং শেখ হাসিনাকে স্বেরাচার বলায়ও ক্ষমা চান। আমি জানি, নেত্রী সবাইকে ক্ষমা করে দেন কিন্তু মনে রাখেন।
ও, আরেকটা কথা বলি; নিজের ব্যক্তিগত জীবনেও আপনি কতটা শুদ্ধ তা কিন্তু আমরা জানি মশিউর রহমান রাঙ্গা সাহেব। ৪৪ ইঞ্চির দুধেল নষ্ট নোংরা কথিত মডেলের সঙ্গে কেলেংকারির কথাও কিন্তু জানা আছে।
লেখক: সিনিয়র প্রতিবেদক, ভোরের পাতা ( ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেয়া)