শুভ জন্মদিন পীর হাবিবুর রহমান

- ১২-Nov-২০১৯ ০৪:৩০ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
পীর হাবিবুর রহমান, কলমের জোরেই প্রথমে এই নামটির সঙ্গে দেশের মানুষের চেনাজানা। নামের আগে পারিবারিক পদবী ‘পীর’ যুক্ত থাকায় অনেকেই তাকে প্রচলিত পীর ভাবতেন এবং বিস্মিত হতেন, একজন ‘পীর’ কী করে এমন বীরের মতো নির্ভয়-লেখা লিখতে পারেন! রাজনীতির অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে ছো মেরে সত্যটা ছিনিয়ে পাঠকের সামনে মেলে ধরেই সেই নব্বইয়ের দশকে রিপোর্টার পীর হাবিবুর রহমান দেশজুড়ে পরিচিতি পান। লেখার দাপটেেই তিনি গণমাধ্যমে অনন্য উচ্চতায় পৌছে যান।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিকাশকালে পীর হাবিবুর রহমানকে আপাদমস্তক মানুষ আবিস্কার করে টিভি পর্দায়। মাঠ পর্যায় চষে আসা এই সাংবাদিক টক শোর সূচনালগ্ন থেকেই নিজেকে জড়ান। জীবনের মধ্যপর্বে পৌছে পরিচিতির সীমিত আঙিনা ভেঙে রাজনৈতিক ভাষ্যকার ও তুখোর বিশ্লেষক পীর হাবিব হয়ে ওঠেন তুমুল জনপ্রিয়, দেশে ও বিদেশে। তার এই জনপ্রিয়তার নেপথ্যে রয়েছে পরিশীলিত মেধা, যুক্তিবোধ আর বিবেকের দাসত্ব।
অনুসন্ধানী লেখা ও বিশ্লেষণী কথা যাদের প্রিয়, সেইসব পাঠক-দর্শককে শুরুতেই দেয়া দরকার ছিল একটা খবর। পীর হাবিব আজকে পা রেখেছেন ৫৭ বছরে, আজ (১২ নভেম্বর মঙ্গলবার) তার ৫৬ তম জন্মদিন। আসুন তাকে সবাই জানাই জন্মদিনের অভিবাদন। ভোরের পাতা পরিবারের এর পক্ষ থেকে এই দিনে তাকে জানায় প্রাণঢালা অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা।
পায়ে পায়ে ছাপ্পান্ন বছর পেরিয়ে এসেও পীর হাবিব এখনও গতিশীল। আজকের রাজনৈতিক ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে তিনি বলতে পারেন আগামী দিন রাজনীতিতে কি ঘটতে যাচ্ছে। খবরের ভেতরের খবর বের করে আনতে কাকে খোঁচা দিতে হবে, তা ভালোই জানেন। লেখায় যুক্তির খেলা, সীমিত আবেগ আর জাগ্রত বিবেকের অপুর্ব সম্মিলন ঘটান বলেই তার কলাম হৃদয় স্পর্শ করে যায়। একাকার হয়ে যান পাঠক, ভাবতে শুরু করেন এযে তার মনের কথা।
পীর হাবিবুর রহমান বর্তমানে প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। মাঝখানে অবশ্য বেশ কিছুদিন দূরে ছিলেন জনপ্রিয় এই দৈনিক থেকে। এসময় তিনি গড়ে তোলেন অনলাইন নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি. নিউজ। পোর্টালটির প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে দ্রুত, সার্বক্ষণিক ও গ্রহণযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে পূর্বপশ্চিমকে প্রতিষ্ঠিত করেন। গতবছরের জুন মাসে পীর হাবিব ফিরে আসেন পুরোনো আঙিনা বাংলাদেশ প্রতিদিনে।
১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগরে এক মধ্যবিত্ত সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন পীর হাবিবুর রহমান। তার বাবার নাম মোহাম্মদ রইছ আলী পীর ও মা সৈয়দা রাহিমা খানম। পীর হাবিব সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ(সম্মান), এমএসএস করেন। সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি ১৯৮৪ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালে।
রাজশাহী প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পীর হাবিবুর রহমান ছাত্রজীবনে ছাত্ররাজনীতি ও গল্প লেখালেখি করতেন। সাংবাদিকতায় এসে তার সেই রাজনৈতিক দলীয় বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসেন। ১৯৯১ সাল থেকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ’৯২ সালে বাংলাবাজার পত্রিকার নির্মাণ পর্ব থেকে মূলত তার পেশাদারিত্বের সূচনা ঘটে। তারপর দৈনিক যুগান্তরের নির্মাণ পর্ব থেকে ছিলেন দীর্ঘদিন। বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে হয়েছিলেন আলোচিত রিপোর্টার। আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি হয়ে দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সর্বশেষ ভারতের লোকসভা নির্বাচন কাভার করা এই সাংবাদিক ২০০০ সালে জাতিসংঘের সহস্রাব্দের অধিবেশন, জর্ডানের আইপিও সম্মেলনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্ট কাভার করেন।
পীর হাবিবুর রহমানের বিভিন্ন কলাম নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু বই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, অব দ্যা রেকর্ড, এক্সক্লুসিভ, টক অব দ্যা প্রেস, ভিউজ আনকাট ও মন্দিরা প্রভৃতি। এরই মধ্যে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন। গত তিন বইমেলায় প্রকাশ পাওয়া ‘জেনারেল ও কালো সুন্দরীরা’, ‘লজ্জাবতী’ ও ‘বুনোকে লেখা প্রেমপত্র’ পাঠকনন্দিত হয়েছে। সাংবাদিকতায় তার উল্লেখযোগ্য কাজ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রামাণ্য পীর হাবিবুর রহমান’ নামের একটি গ্রন্থ।