ঢাকায় বিদেশী মদে বিষাক্ত মিথানল, হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক

- ১৯-Nov-২০১৯ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
উৎপল দাস
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অবৈধ ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের পরই অবৈধ বিদেশী মদের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু বসে নেই মাদক ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই বিদেশী মদের মধ্যে বিষাক্ত মিথানল (একটি বর্ণহীন বিষাক্ত তরল এলকোহল) মিশিয়ে বাজারজাত করছে অবৈধভাবে। ফলে স্পিরিটের মতোই বিষাক্ত এই রাসায়নিকের বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণও করেছেন কমপক্ষে ৬ জন। এমনকি রাজধানীর অভিজাত হাসপাতালগুলোতেও শতাধিক রোগী গত এক মাসে ভর্তির খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চলতি সপ্তাহেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ীর মেয়ে মিথানলযুক্ত বিদেশী মদ গিলে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া রাজধানীর পান্থপথ, ধানমন্ডি এবং গুলশানের মতো অভিজাত এলাকায় অবস্থিত তিনটি হাসপাতালে মদের বিষক্রিয়ায় ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। উচ্চবিত্ত ও প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় এবং সম্মানহানির ভয়ে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
এদিকে, রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় অবস্থিত অভিজাত হাসাপাতালের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছেন, এ সংক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত এক মাস ধরেই এমন অনেক রোগী ভর্তি হয়েছেন। যাদের শরীরে বিষাক্ত মিথানলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। রোগীদের সবাই বিদেশী ব্রান্ডেড মদ পান করতেন বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
এদিকে, নাম প্রকাশ করার না শর্তে একজন অভিভাবক ভোরের পাতাকে বলেন, বিদেশী মদের মধ্যে বিষাক্ত এই মিথানল মিশিয়ে সুকৌশলে বাজারজাত করছে একটি সিন্ডিকেট। ফলে টাকা দিয়ে এখন মানুষ বিষ পান করছে। এমনকি রাজধানীর কয়েকটি অভিজাত ক্লাবেও মদ পানের পর অনেকে অসুস্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। আক্ষেপ করে বলেন, মিথানলযুক্ত মদ পান করে ইতিমেধ্যেই একজন নারী পাইলটসহ আরো ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে তিনি এই বিষাক্ত মদ সরবরাহ বন্ধের দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। বিষাক্ত মিথানলযুক্ত বিদেশী মদের বিষয়ে আমি খোঁজ নিচ্ছি। বিষাক্ত মদ বাজারজাত করা অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে অভিজাত ক্লাব এবং বিভিন্ন বারে মদে বিষাক্ত কিছু রয়েছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হবে।