গোলাপি টেস্টের প্রথম দিনে ধূসর বাংলাদেশ

  • ২২-Nov-২০১৯ ০৩:৫৩ অপরাহ্ন
Ads

:: স্পোর্টস ডেস্ক ::

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বড় স্কোর করতে পারেনি টাইগাররা। বল হাতে ভালো শুরুর আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত রান পাহারে চাপা পড়ার আশংকায় মুমিনুলের দল। গোলাপি টেস্টের প্রথম দিনটা তাই স্মরণীয় হয়নি বাংলাদেশের জন্য। ধূসর পারফরমেন্সে শুরুতেই ব্যাকফুটে তারা।

প্রথম দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান।

ভারতের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন রোহিত শর্মা ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল। শুরু থেকেই মেরে খেলার চেষ্টা করতে থাকেন দুজন। আল আমিনের প্রথম ওভারেই আনেন ১১ রান। তবে আল আমিন হাল ছাড়ার পাত্র নন। নিজের তৃতীয় ওভারেই আগারওয়ালকে ফেরান তিনি। বাংলাদেশ পায় কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মায়াঙ্ক ফেরেন ১৪ করে।

রাহীর বলে রোহিত একবার ক্যাচ দিয়েছিলেন। তবে ১২ রানে থাকা রোহিতকে জীবন দেন আল আমিন। অনেকেই ভাবছিলেন এবার হয়তো বড় ইনিংস খেলতে যাচ্ছেন হিটম্যান। তবে এর আগেই তাকে হতাশ করে সাজঘরে পাঠালেন এবাদত। টাইগার পেসারের ইনসুইং ডেলিভারী বুঝতেই পারেননি তিনি। ফেরেন ২১ রানে।

ম্যাচে ফেরার বদলে পূজারা ও কোহলির ব্যাটে আবার পিছিয়ে পড়ে মুমিনুলের দল। দুজনের ৯৪ রানের জুটিতে লিড নেয় ভারত। অর্ধশতক পূরণের কিছু পরেই এবাদতের বলে আউট হলেন পূজারা। এর আগে ৫৫ রান করেন তিনি। অপরপ্রান্তে কোহলিও তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। দিনশেষে তিনি অপরাজিত আছেন ৫৯ রানে। অপরপ্রান্তে রাহানে ২২ রান থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। 

বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন পেসার এবাদত হোসেন। অপর উইকেট নিয়েছেন আল আমিন হোসেন।

এর আগে দিনের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার ক্যাপ্টেন মুমিনুল হক। ঐতিহাসিক টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস। শুরু থেকেই দেখে খেলতে থাকেন দুজন। তবে এই প্রতিরোধ ৭ ওভারের বেশি টেকেনি। সপ্তম ওভারে ইশান্ত শর্মার তৃতীয় বলেই ইমরুলকে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার জো উইলসন। তবে রিভিউয়ে দেখা যায় তিনি নট আউট। দুই বল পরেই ফের ইশান্তের লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। এবার রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি কায়েস। ফেরেন ৪ রানে।

তার জায়গায় আসা মুমিনুলও ব্যর্থ। টাইগার ক্যাপ্টেন ফেরেন কোনো রান না করেই। উমেশ যাদবের বলে রোহিতের ক্যাচ হয়ে আউট হন তিনি। মোহাম্মদ মিথুনও পারেননি রানের খাতা খুলতে। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে যান তিনি। মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকের উপর দায়িত্ব ছিল দলের হাল ধরা। কিন্তু গোলাপি জ্বরে ভুগে তিনিও কোনো রান না করেই ফিরেছেন। শতরান করতে পারাই যেনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের জন্য।

ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরার প্রতিযোগিতায় একমাত্র আশা দেখাচ্ছিলেন সাদমান ইসলাম। কিন্তু দলীয় ৩৮ রানরে মাথায় তিনিও ফেরেন প্যাভিলিয়নে। ৫২ বলে ২৯ রান করে উমেশ যাদবের বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিছুটা ধরে খেলার চেষ্টা করেছেন। তবে ২১ বল স্থায়ী ইনিংস খেলে তিনি ফিরেছেন মাত্র ৬ রান করে। 

আসা যাওয়ার মিছিলে লড়ে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। ২৭ বলে করে ফেলেছেন ২৪ রান। তবে এসময় শামির একটি বাউন্সার তার মাথায় লাগে। কিছুক্ষণ শুশ্রূষা নিলেও সুস্থ অনুভব না করায় মাঠ ছাড়েন তিনি। একইসঙ্গে চা বিরতির ঘোষণা দেন আম্পায়াররা।

বিরতি থেকে ফিরলেও দলের চেহারা বদলায়নি। মাত্র ১ রান করে ফেরেন এবাদত। লিটনের জায়গায় কনকাসন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে আসেন মেহেদি মিরাজ। তিনি আর নাইম মিলে রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে দলীয় শতক পূরণের আগে ৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মিরাজ। নাইমও আউত হন এর পরেই। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ১০৬ রানে অল আউট হয় টাইগাররা। 

ভারতের হয়ে ৫ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা। এছাড়া যাদব তিনটি ও শামি দুটি উইকেট শিকার করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

বাংলাদেশ: ১০৬

সাদমান ২৯, লিটন ২৪* (রিটায়ার্ড হার্ট)

ইশান্ত ২২/৫, যাদব ২৯/৩

ভারত: ১৭৪/৩

কোহলি ৫৯*, পূজারা ৫৫

এবাদত ৬১/২, আল আমিন ৪৯/১

Ads
Ads