কেন্দ্রের অর্ধেকেরও বেশি নেতাকর্মীর ঝরে পড়ার সম্ভবনা আছে

- ৭-Dec-২০১৯ ০৬:১৭ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলে পরিবর্তন আসবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা দিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। তাঁদের মতে, কাউন্সিলের মাধ্যমে ঝরে পড়তে পারেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের অর্ধেকেরও বেশি নেতা আর নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে এক ঝাঁক নতুন মুখ যুক্ত হতে পারেন।দলকে সরকার থেকে পৃথক করতে বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকে হারাতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক ও গণভবন সূত্র কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি পদ ছাড়া আওয়ামী লীগের সব পদেই পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শুক্রবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের দপ্তর উপকমিটির সভায় তিনি বলেন, ‘একটা পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া আমরা কেউই দলের জন্য অপরিহার্য না। তিনি এখনো আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক এবং অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। এর পরের পদটা কাউন্সিলরদের মাইন্ড সেট করে দেয়। সেটাও তিনি (সভাপতি) ভালো করে জানেন। আর দল কিভাবে চলবে, কাকে দিয়ে চলবে, সেটাও তিনি জানেন।’
এর আগে গত বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীর কমিটিতে সম্পূর্ণ নতুন মুখ এসেছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতেও নতুন মুখ আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন মানেই নতুন-পুরনো মিলিয়ে কমিটি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত বুধবার অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কমিটির বৈঠকে কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদে নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে তাঁর মনোভাব ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁদের মূল্যায়ন করা হবে। বিতর্কিতদের নেতৃত্ব থেকে বিদায় দেওয়ার ইঙ্গিত করেন তিনি। শেখ হাসিনা সততার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তাঁকে অনুসরণ করতে হবে। যাঁরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করবেন রাজনীতিতে তাঁদের কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
দলীয় সূত্র জানায়, এবারও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী থেকে কাউকে কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে চলে যেতে হতে পারে। আবার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সভাপতিমণ্ডলী, সদস্য থেকে সভাপতিমণ্ডলী এবং সম্পাদকমণ্ডলী ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্য থেকে যুগ্ম সম্পাদক হতে পারেন কোনো কোনো নেতা। একেবারে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে সম্পাদকমণ্ডলীতে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে জানান, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী সংসদে ব্যাপক রদবদলের চিন্তাভাবনা করছেন। তাঁর (শেখ হাসিনা) সাম্প্রতিক বক্তব্যে সে আভাস পাওয়া গেছে বলে তাঁরা জানান।
সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর ৩৪ জনের মধ্যে বাদের তালিকায় রয়েছেন প্রায় অর্ধেক। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যসংখ্যা ২৮। কাউন্সিলের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে যাঁদের স্থান দেওয়া যায় না তাঁরা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য পদ পেয়ে থাকেন।