উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ, বাস-ট্রেনে আগুন

- ১৫-Dec-২০১৯ ০৬:০৯ পূর্বাহ্ণ
:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
ভারতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চতুর্থ দিনে গড়ালো। বিশেষ করে অশান্ত পশ্চিমবঙ্গ। বাস ও ট্রেনে বেপরোয়াভাবে আগুন দেয়া হয়েছে। মূলত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ অশান্ত হয়ে উঠেছে।
বিক্ষোভকারীরা শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গে ১৫ টির মতো বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ৬টি রেলস্টেশনে ভাংচুর চালায়। চলমান এ আন্দোলনের মাঝেই নাগরিকপুঞ্জ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে রাজপথে নামার কর্মসুচি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে আসামের গুহাটিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল বিক্ষোভ দমনে এবং ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স ও ইসরাইল দেশটিতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
সময়ের সাথে সাথে বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। গতকাল নয়াদিল্লিতে দাঙ্গা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্ররা। সেখানে ৪০ জন ছাত্রকে আটক করা হয় এবং তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টেয়ারগ্যাস ব্যবহার করা হয়। কেরেলা ও কর্ণাটেক প্রদেশে অনুরুপভাবে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, কেরেলা, মাদয়া ও ছত্রিশগড় প্রদেশ থেকে ইতোমধ্যে এ আইন বাস্তবায়ন করা হবে না ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যান্য রাজ্য থেকেও একই ধরণের ঘোষণা আসতে পারে। সুতরাং চলমান এ আন্দোলন কোথায় গিয়ে থামে সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
বিতর্কিত এ আইনের ফলে শুধু দেশেই না আন্তর্জাতিকভাবেও কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে মোদি সরকার। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল বিতর্কিত এ নাগরিক আইনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অশান্ত এ পরিবেশে দেশটিতে সফর বাতিল করেছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরও বাতিল করা হয়েছিল। তাছাড়া বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশের কূটনৈতিকদের গাড়িবহরে হামলার পর দেশটিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয় বলে জানায় বিবিসি।
এরআগে এক নারী পশু ডাক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় সারা ভারতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ব্যর্থতার দায়ে অভিযুক্ত হচ্ছে মোদি সরকার। সব মিলিয়ে ভারত একটি অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংকটের দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে নাগরিক আইন ও ধর্ষণ ইস্যুতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতাদের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে।