জঙ্গিদের লক্ষ্যই ছিল পুলিশকে চাপাতি দিয়ে হামলার

- ১৯-Dec-২০১৯ ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বিশেষ করে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলার টার্গেট ছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি)। রাজধানীর শাহ আলীর রাইনখোলা ঈদগাঁহ এলাকা থেকে এবিটির চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাদের মোবাইল ফোন ফরেনসিক টেস্ট করে এ পরিকল্পনার তথ্য জানতে পারে র্যাব-৪।
বৃহস্পতিবার(১৯ ডিসেম্বর) র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, কোনো ইলেক্ট্রিক ডিভাইস নয়, বরং চাপাতি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তারা দু’তিনজন মিলে আলাদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল।
মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বুধবার রাতে রাজধানীর শাহআলী থানা এলাকা থেকে এবিটির চার সক্রিয় সদস্যকে আটক করে র্যাব-৪। আটকদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফরেনসিক টেস্ট করে পুলিশের উপর হামলার এ পরিকল্পনার এ তথ্য জানা যায়।
আটকরা হলো- মোহাম্মদ আরিফুল করিম চৌধুরী ওরফে আদনান চৌধুরী (৩৮), মেহেদী হাসান শাকিল ওরফে বাবু (২০), আব্দুল আল মামুন ওরফে আসাদুল্লাহ হিল গালিব (১৮) ও নাজমূল হাসান (২৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেট, উগ্রবাদী ডিজিটাল কনটেন্ট, বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক ডিভাইস ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা এ গ্রুপের ২৩ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এই গ্রুপের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত গ্রেফতার করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
গ্রেফতারদের মধ্যে দু’তিনজনকে পেয়েছি যারা হরকাতুল জিহাদ (হুজি) থেকে দল পরিবর্তন করে আনসার আল ইসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেয়।
বুধবার রাতে আটক চারজনের মধ্যে আরিফুল করিম ঢাকার এক অংশের আমির ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালেও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার হয়ে এক বছর ১১ মাস সাজা ভোগ করেছেন। আগে হরকাতুল জিহাদের সদস্য ছিলেন আরিফুল। জেল থেকে বের হয়ে এবিটিতে যোগ দেন। তিনি অনলাইনে শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
আরিফুল কম্পিউটার সায়েন্সে চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করে একটি ব্যাংকের আইটি বিভাগে চাকরি করতেন। জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অপরাধে চাকরিচ্যুত হলে পরে অনলাইনে কম্পিউটার সামগ্রী বিক্রির আড়ালে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
মেহেদী হাসান বাবু প্যারা মেডিকেলে পড়াশোনা করতেন। গত দুই বছর ধরে তিনি এবিটির সঙ্গে যুক্ত। আল মামুন আলীম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনিও দু’বছর ধরে যুক্ত। নাজমুল হাসান একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। অনলাইনে তিনি ছদ্মনাম ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য সব সময় গোপন অ্যাপস ব্যবহার করতেন।
চারজনকে আটকের সময় আরো কয়েকজন পালিয়ে যায়। পলাতকসহ এই গ্রুপের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।