শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত সওয়ার হয়েছে: কাদের

  • ২-Aug-২০১৮ ০৬:০০ অপরাহ্ন
Ads

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের যৌক্তিক আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের সওয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সাম্প্রদায়িক শক্তি সওয়ার হয়েছে। ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যৌক্তিক আন্দোলনকে তারা অযৌক্তিক পথে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।’ কোনও অপশক্তির উস্কানিতে বিভ্রান্ত না হতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আমরা তার সিমটম দেখতে পাচ্ছি। বিএনপি-জামায়াত ও তার সাম্প্রদায়িক শক্তি গত পাঁচ বছরে পাঁচ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। কোটাবিরোধী আন্দোলনের ওপর ভর করেও সফলতা পায়নি। তারা এখন এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ওপর সওয়ার হয়েছে। আমরা আন্দোলনের পাঁচ দিনে এসব চক্রান্ত লক্ষ করেছি। যৌক্তিক আন্দোলনের মধ্যে রাজনৈতিক মতলবি গোষ্ঠী বিশ্রী ও অশালীন স্লোগানে উস্কানি দিচ্ছে। খাবার ও পানি সরবরাহ করছে। তাদের উত্তেজিত করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে উস্কে দিচ্ছে। প্রলোভিত করছে। এই মহল সন্ধ্যার পর তৎপর হয়।

তিনি বলেন, আন্দোলনে আমাদের অনেক মন্ত্রী-এমপিকে নাজেহাল করা হয়েছে। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ অপদস্থ হয়েছে। তবে আমরা মনে করি না এসব শিক্ষার্থীরা করেছে। এসব অনুপ্রবেশকারী ও মতলববাজরা করেছে। বুঝতে পেরে শিক্ষার্থীরাও তাদের অনেককে বের করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের ভয়ে, ভাঙচুরের ভয়ে ও মারপিটের ভয়ে অনেক যানবাহন রাস্তায় নামছে না। আমি নিজেই গতকাল পর্যন্ত বিআরটিসির গাড়ি চালু রেখেছিলাম। সে ড্রাইভাররা এখন জীবনের আশঙ্কায়, নিরাপত্তার ভয়ে গাড়ি চালাতে চায় না। এই আন্দোলনে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় কালো ছায়া নেমে এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ গাড়ির অভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের প্রতিবাদী কণ্ঠকে সম্মান করি, তোমরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ ও আগামী দিনের নেতা। তোমাদের অনুরোধ করি, তোমরা শান্ত হও। তোমরা দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে তোমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের কাজে লাগাবে। উসকানিতে অবশ্য তোমরা বিভ্রান্ত হবে না। আমি ছাত্রছাত্রীর বক্তব্য শুনেছি। তাদের মধ্যে শুভবোধ আছে। এই শুভবোধ জাগ্রত হয়েছে। তা আমাদের কাজে লাগবে। প্লিজ, সহযোগিতা করুন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা প্রথম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সর্বোচ্চটা দেখিয়েছি। পাঁচ দিন অতিবাহিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সরকার কিন্তু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেনি। প্রথম থেকেই এই পরিস্থিতিতে আমরা প্রো-অ্যাকটিভ ছিলাম, এখনও প্রো-অ্যাকটিভ আছি। শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি পাবলিক স্টেটমেন্ট করে আমরা মেনে নিয়েছি। তাদের এমন কোনও দাবি নেই যা আমরা মানতে অপারগতা প্রকাশ করছি।

তিনি বলেন, ঘটনার পর দ্রুততার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে এখন কাস্টডিতে আছে। এই ঘটনা কীভাবে হয়েছে, তা গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বিষয়টি মনিটরিং করছে। তার নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনও দুর্ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতা করা একটি মূল বিষয়। সেটা আমরা করেছি। এখানে কোনও গাফিলতি বা উদাসীনতা ছিল না।

সড়ক পরিবহন আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন মন্ত্রণালয় আগামী সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইন উত্থাপন করবে। সেটি বিল আকারে পাস হবে। এরপরে এই সরকারের শেষ অধিবেশন সম্ভবত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এ আইনটি পাস হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে সরকারের আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি নেই। কোনও প্রকার ঘাটতি শৈথিল্য নেই।

দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্যসহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ধৈর্য সহকারে দেখছি। নেতাকর্মীদের বলেছি উস্কানির ফাঁদে পা না দিতে। কোনও অনুপ্রবেশকারী যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, চক্রান্ত করে যৌক্তিক আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে না পারে তার জন্য সতর্ক থাকতে বলেছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, বাহাউদ্দিন নাসিম, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান নওফেল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতাকর্মীরা।

/ই

Ads
Ads