শেখ হাসিনার জনসভায় ২৪ জনকে হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি

- ২০-জানুয়ারী-২০২০ ১২:৫৬ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
১৯৮৮ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা মামলার রায়ে পাঁচজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। ঘটনার ৩২ বছর পূর্ণ হওয়ার চারদিন আগে এ রায় এলো।
সোমবার বিকেল ৩টার কিছু পরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা হলেন- মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল ও আব্দুল্লাহ। এরা প্রত্যেকেই পুলিশের সাবেক সদস্য এবং একমাত্র গোপাল চন্দ্র পলাতক, বাকিরা কারাগারে আছেন।
একই রায়ে আদালত ৩২৬ ধারায় পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মামলার দুই নম্বর সাক্ষী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন দফতর সম্পাদক ফরিদুল আলম খান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজকের রায় একটি ঐতিহাসিক রায়। সেদিন হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ছাত্র-জনতা নিজেদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিলেন। দীর্ঘ ৩২ বছর পর এ রায়ে নিজ কর্মী আর সহযোদ্ধাদের হারানোর বেদনা কিছুটা হলেও লাঘব হলো।’
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের জনসভা ছিল। ওই দিন বেলা ১টার দিকে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাকটি আদালত ভবনের দিকে আসার সময় গুলিবর্ষণ শুরু হয়। সেসময় আইনজীবীরা মানববেষ্টনি তৈরি করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করে তাকে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যান।
আলোচিত এই মামলার সাক্ষীরা আদালতে বলেছেন, ওই দিন পুলিশের গুলিতে মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়। তৎকালীন সরকার নিহতদের কারও লাশ পরিবারকে নিতে দেয়নি। হিন্দু-মুসলিম নির্বিচারে সবাইকে নগরীর বলুয়ার দীঘি শ্মশানে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল।
ওই দিনের ঘটনায় নিহতরা হলেন- মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন চৌধুরী, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া, মো. কাসেম, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ ও শাহাদাত।
তৎক্ষালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। কিন্তু সেই সময়ে মামলাটির কার্যক্রম এগোয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়।