দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আশঙ্কাজনক ৫

- ২১-জানুয়ারী-২০২০ ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ
:: ইবি প্রতিনিধি ::
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাহকারী প্রক্টরসহ আহত হয়েছে ২০ জন। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান ফটকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বন্ধুবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব এ ফুল দিয়ে মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য ক্যাম্পাসে আসে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তাদের গ্রহণ করার জন্য প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় সভাপতি গ্রুপের কয়েকজন কর্মী। এসময় বিদ্রোহী দলের নেতা কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমিনের মাথা ফাটিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে মিছিল দিলে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী ও পদবঞ্চিত দলের নেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, তৌকির মাহফুজ মাসুদ, মিজানুর রহমান লালন ও শিশির ইসলাম বাবুর কর্মীরা হামলা চালালে সাধারণ সম্পাদক রাকিবসহ সভাপতি গ্রুপের ১০ জন আহত হয়। ১০ জনের মধ্যে চার জনের মাথা ফেটে গেছে বলে জানিয়েছেন সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ।
এছাড়াও সহকারী প্রক্টর আরিফুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, শহীদুল ইসলামসহ বিদ্রোহী দলের কয়েকজন আহত হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ছাত্রলীগের বিদ্রোহী দলের নেতারা ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ করেছে।
এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী ও বহিরাগতের হামলা দাবি করে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতারা তাদের গ্রেফতারের দাবীতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে অর্ধ ঘন্টা। এতে ভোগান্তিতে পরে সাধারণ জনগণ।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় বিদ্রোহীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা বন্ধ থাকার পর চারটায় গেইট খুলে দেয়া হয়।
এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করতে চাচ্ছিলাম। এজন্য তারাও এক হয়েছিল কিন্তু সেখানে তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেয়। আর তার প্রতিবাদে আমরা মিছিল দিলে সেই মিছিলে পুনরায় হামলা চালিয়ে আমাদের সাধারন সম্পাদক সহ বেশ কয়েকজনের মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং অনেকেই আহত হয়। তাই তদন্ত সাপেক্ষে আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আরিফ বলেন, সকাল হতে একটানা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পলাশ-রাকিব গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত। লোকজন নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে আসার জন্য চেষ্টা করেছিল । পদবঞ্চিত গ্রুপ লালন-আরাফাতরা তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেয়ার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এসময় দু'পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। তিনটা ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ আমি পেয়েছি, তবে অস্ত্রের ব্যবহারের কোনো খবর আমি পাইনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর আনিছুর রহমান বলেন, মূলত ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সম্পাদক তাদের অনুসারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে চেষ্টা করে। এসময় বিদ্রোহীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আহত হয়। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি এবং পুলিশের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে সহর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এখন শান্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য , ইবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর কিছুদিন দলীয় কার্যক্রম চালায় পালাশ রাকিব । ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে কমিটি আনা হয়েছে বলে অডিও ফাঁস হলে বিদ্রোহীরা তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। পরে কয়েক দফা ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব।