শেখ হাসিনার নির্দেশ মুজিববর্ষ নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে লম্প ঝম্প না করার

  • ১৯-ফেব্রুয়ারী-২০২০ ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Ads

:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অতিউৎসাহী হয়ে লম্প ঝম্প না দেয়ার  কিংবা বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। নিজ দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্য হবে গৃহহীনদের গৃহ দেওয়া।’ একইসঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বিনা অনুমতিতে কোথাও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল যাতে তৈরি না করা হয় সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছেন। সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রী ও সিনিয়র সাংসধদের অনুপস্থিতি নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যারা নিয়মিত অধিবেশনে আসেন না তাদের সিট দূরে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি  মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশন শেষে রাতে সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায়  সভাপতিত্ব কালিন সংসদ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী এ সতর্কবার্তা দেন। কয়েক সংসদ সদস্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাক্ত পতিক্রীয়ায় বক্তব্যগলো জানাযায়। একঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, গাজী শাহনেওয়াজ, মাজহারুল হক প্রধান, আ স ম ফিরোজ, ছোট মনির, মৃনাল কান্তি দাস, নাজিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মুজিববর্ষ উদযাপন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির অর্থ দিয়ে যেন কেউ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি না করে। আবার অতিউৎসাহী হয়েও যেন কেউ যত্রতত্র ম্যুরাল নির্মাণ না করে। পচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামানের হত্যার পর কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটা আমরা দেখেছি। কাজেই বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করতে হবে, অতিউৎসাহী হয়ে কিছু করা যাবে না।’

সভায় প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষে গৃহহীনদের বাড়িঘর করে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ ব্যাপারে এমপিদের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, মুজিববর্ষে যেন কেউ গৃহহীন না থাকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। যাদের ঘরবাড়ি নেই তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি সুস্থ থাকলে আসবেন। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভুটানের রাজাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তারা আসবেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। এই ডাকটিকিট যাতে বিশ্বের প্রতিটি দেশের সংসদের স্পিকারদের কাছে পৌঁছানো যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।

এসময় মার্চের শেষ দিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন হবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য আগামী ২২ ও ২৩ মার্চকে সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই অধিবেশনে এমপিদের মধ্যে যারা বক্তব্য দেবেন তাদেরকে আগে থেকে স্পিকারকে অবহিত করা এবং প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ১৯ মার্চ সংসদ ভবন চত্বরে শিশুমেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সব সংসদ সদস্য যাতে উপস্থিত থাকেন সে বিষয়ে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন।

সংসদ সদস্যদের মুজিববর্ষের কর্মসূচি স্থানীয় সংগঠক ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে পালনের জন্য বৈঠকে অনুরোধ জানান একাধিক সংসদ সদস্য। তারা বলেন, মুজিববর্ষ পালন করতে গিয়ে এমপিদের সঙ্গে যেন দলের ‍দূরত্ব সৃষ্টি না হয়। দলকে সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি পালন করতে হবে।

সংসদ চলাকালে সিনিয়র সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী বিশেষ করে তার আশপাশের সংসদ সদস্যরা অনুপস্থিত থাকায় বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা সংসদে নিয়মিত না থাকলে তাদের চেয়ারগুলো যেন দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এ সময় শেখ হাসিনা আরও বলেন, অধিবেশন চললে তিনি নিয়মিত বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু দেখা যায় অনেকেই বৈঠকে থাকেন না। তিনি সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় আশপাশের চেয়ারগুলো ফাঁকা দেখা যায়। টেলিভিশনে এই ফাঁকা চেয়ারগুলো দেখা যায়। এতে সংসদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। জরুরি কোনও কাজ না থাকলে সবাই যেন অধিবেশনে উপস্থিত থাকে এইরকম নির্দেশনা প্রদানসহ উপস্থিত সকলের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন।

 

Ads
Ads