রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহারের দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের

- ২৭-ফেব্রুয়ারী-২০২০ ০৩:৫১ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
উচ্চ আদালতসহ রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতসহ ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শুভ্র আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জয়সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: আল মামুন বলেন, ২০১৪ সালে মহামান্য হাইকোর্ট রায় দেয়ার পরেও মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। এমনকি উচ্চ আদালতের অধিকাংশ রায়গুলোও ইংরেজিতে দেয়া হচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বাংলাদেশ সংবিধানের ৩ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করে ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাকে অবমাননা করা হচ্ছে। যানবাহনগুলোর নেমপ্লেট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইনবোর্ড এবং অফিস-আদালতের কাগজপত্রে এখনো সঠিকভাবে বাংলা ভাষার ব্যবহার হচ্ছে না যা অত্যন্ত দুঃখজনক। বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলো। বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশেই ভাষার জন্য জীবন দিতে হয়েছে। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু আমরা সেই ভাষাকে সঠিকভাবে মর্যাদা দিতে পারিনি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ দেশের সকল শহীদ মিনারগুলো অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকে। সন্ধ্যার পর মাদক সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপ করা হচ্ছে। যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আসলেই ভাষা শহীদদের কথা মনে পড়ে কিন্তু বাকি ১১ মাস আমরা তাঁদের ভুলে যাই। হাইকোর্টের রায়ে শহীদ মিনারের পাশে ভাষা শহীদ স্মৃতি জাদুঘর স্থাপনের নির্দেশনা থাকলেও আজও পর্যন্ত তা নির্মিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার মতো ভাষা সৈনিকদের কোন তালিকা করা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক শহিদ মিনার নেই। ১৯৭২ সালে ঢাবির মল চত্বরে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মোজাফফর আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শহীদ মিনার নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেও আজ পর্যন্ত শহীদ মিনার বা কোন স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশ থাকলেও আজ পর্যন্ত অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। কিছুদিন আগে দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনারে প্রধান শিক্ষকের সামনে হিন্দি গান- নৃত্য পরিবেশন করা হয়েছে কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নতুন প্রজন্ম দিন দিন ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে যাচ্ছে। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না করলে খুব শীঘ্রই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচি পালন করা শুরু করবে।