চসিক ৩৭ নং ওয়ার্ডে আ. লীগের প্রার্থী বদল হচ্ছে!

- ৪-মার্চ-২০২০ ০২:১৬ অপরাহ্ন
:: উৎপল দাস ::
দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে সারাদেশে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাছাই করে মনোনয়ন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ৩৭ নং ওয়ার্ডে স্থানীয় এমপিকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েও শেষরক্ষা হচ্ছে না রাজাকারের সন্তান মোহাম্মদ হোসেন মুরাদের।
বুধবার ভোরের পাতায় এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্যের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। কিভাবে একজন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারের সন্তান, যার পরিবারের সবাই বিএনপি জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত, এমন একজন অনুপ্রবেশকারীকে কে বা কারা আওয়ামী লীগের মনোননয় বাগিয়ে নিতে সাহায্য করেছেন তাও খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান এমপি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরাও রাজাকারপুত্র হোসেন মুরাদ এবং তার পৃষ্ঠপোষক বিতর্কিত এমপি এম এ লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেয়া হবে জানিয়েছেন।
তবে তার আগেই চসিক নির্বাচনে ৩৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদলের নৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করে, তৃণমূল আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও পরিক্ষীত কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে। সেক্ষেত্র ২ থেকে ৩ জনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর সহযোগী হিসাবে বিতর্কিত কাউন্সিলর প্রার্থী হোসেন মুরাদের বাবা আবু শামা কাজ করেছেন বলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন। এমনকি, হোসেন মুরাদের বড় ভাই হাসান মুরাদ স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার পিতা একাত্তরে দেশের প্রয়োজনে মুসলিম লীগের রাজনীতি করেছেন। চট্টগ্রামের রাজকারের তালিকায়ও তার নাম রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হোসেন মুরাদ শুধু রাজাকারের সন্তানই নয়, তার পুরো পরিবারই জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। হোসেন মুরাদের আপন বড় ভাই হাসান মুরাদ বন্দর থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ৩৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমনকি সরকার বিরোধী নাশকতা মামলার আসামি হিসাবে কয়েকবার জেলও খেটেছেন। এছাড়া হোসেন মুরাদের ছোট ভাই রুস্তম মুরাদ একজন শিবিরের ক্যাডার হিসাবে জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এদিকে, এমন একজন বিতর্কিত অনুপ্রবেশকারীকে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন দেয়ায় পরই ৩৭ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ৩৭ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী পরিবর্তনের জোর দাবি জানিয়েছেন। এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্য এ এ লতিফের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচেনর সময়ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছিল।