আপনারা অর্থমন্ত্রী হলে কী করতেন, সাংবাদিকদের মুস্তফা কামালের প্রশ্ন

- ৪-মার্চ-২০২০ ০২:৩৫ অপরাহ্ন
:: ভোরের পাতা ডেস্ক ::
দেশ থেকে গত সাত বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এ ব্যাপারে সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই। সংস্থাটি সরকারকে কিছু জানায়নি। তবে অভিযোগ সত্য হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
বুধবার (৪ মার্চ) বিকালে শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা (জিএফআই) আমাকে দেখতে পারে না, সরকার দেখতে পারে না? আইডিয়া থেকে অনেক কিছু বলা যায়। তারা আইডিয়ার উপরে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।
অর্থপাচার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু এই বিষয়ে জানি না তা নিয়ে কথা বলবো না। বিষয়টা আমরা দেখবো ও বিশ্লেষণ করবো। পরে আপনাদের জানাবো। বর্তমানে আমার নলেজে নাই।
সারাবিশ্বে এই তথ্য প্রকাশ করেছে জিএফআই এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইডিয়া দিয়ে অনেক কিছু করা যায়। যেহেতু বিষয়টা জানি না এই বিষয়ে কিছু বলবো না। তারা এই তথ্য কোথায় পেয়েছে? আমি বলে দিলাম বছরে আমেরিকা থেকে ৩০ হাজার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। তাহলেই হয়ে গেল?
টাকা পাচারে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়ে মামলা ছাড়া কী করতে পারি। কারো কোনো অপরাধ প্রকাশ হলে মামলা করি। মামলা করলে দুদক থেকে শুরু করে সরকারের অন্যান্য তদন্ত সংস্থা ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কাউকে জেলে পাঠায়, কেউ আবার মুক্তি পায়।
ব্যবসায়ীরা কানাডায় বাড়ি করছে এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারা অর্থমন্ত্রী হলে কী করতেন? আমরাও পদক্ষেপ নিচ্ছি। অনেক মামলা করি, অনেকে জেলে আছে। তবে সর্বশেষ বিষয়টা কোর্ট দেখে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার ২৭০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা। যা দেশের চলতি বছরের (২০১৯-২০২০) জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান। প্রতি বছর গড়ে পাচার হয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই প্রক্রিয়ায় এই অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)। টাকা পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।