করোনাভাইরাস: ইতালিতে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা

- ৫-মার্চ-২০২০ ০৫:০৯ পূর্বাহ্ণ
:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। গতকাল বুধবার একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৭ জনে। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৭০৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৭৬ জন।
করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে সব স্কুল কলেজ ১৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইতালি সরকার।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে ও শিক্ষামন্ত্রী লুসিয়া আজ্জোলিনা এই ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
লুসিয়া আজ্জোলিনা তার টুইটারে বলেন, সব ধরনের স্কুল-কলেজ আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ‘বিচক্ষণ’ সিদ্ধান্তটি কোনো সাধারণ সিদ্ধান্ত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল বন্ধ থাকবে। শুক্রবার থেকে অনলাইনের শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হবে।
দেশটির করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মধ্যে উত্তরাঞ্চলেই প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশটির ২০ অঞ্চলের মধ্যে ১৯ টিতেই করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই আপাতত এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।
চীন থেকে শুরু হওয়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি ইতোমধ্যে ৮০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৯৫ হাজার জন। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিন হাজার ২৮৫ জন। আক্রান্ত ও নিহতদের অধিকাংশই চীনের। দেশটির মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত দুই হাজার ৯৮১ জন মারা গেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৮০ হাজার ২৭০ জন।