করোনাভাইরাস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২৫৮

- ১১-মার্চ-২০২০ ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ
:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে পুরো বিশ্ব। প্রতিষেধকবিহীন এ ভাইরাস চীনের পাশাপাশি বিশ্বের ১১৫টি দেশে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। সময়ের ব্যবধানে এ ভাইরাসে আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যাও ক্রমশই বেড়েই চলেছে।
সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরার তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় প্রাণঘাতী করোনভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪ হাজার ২৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ৩ হাজার ১৩৬ জনই চীনা নাগরিক। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৬০০ জন হয়েছেন। এর মধ্যে চীনেই প্রায় ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষ। এছাড়া এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪ হাজার ২১৪ জন।
এদিকে, এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো উহান পরিদর্শন করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের শরীরে করোনাভাইরাস আছে কিনা তা টেস্ট করাচ্ছেন না বলে দাবি সাংবাদিকদের।
মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা, এমন প্রশ্ন ছিল ওয়াশিংটনের সংবাদ কর্মীদের। যদিও সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান ট্রাম্প। তবে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অথবা তার কর্মকর্তারা এখনো করোনাভাইরাসের জন্য নির্ধারিত পরীক্ষা করেননি।
চীনের পর সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। দেশটিতে একদিনেই ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩১ জনে। আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৪৯ জন। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার। ইরানে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪২ জন। মারা গেছেন ২৯১ জন।
জাপানে নোঙ্গর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৬৯৬ যাত্রী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। জার্মানিতে এই ভাইরাসে ১১৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। ফ্রান্সে ১৬০৬ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩০ জন। জাপানে আক্রান্ত হয়েছে ৫৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।
স্পেনে আক্রান্ত ১৬২২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ৫২৫, মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ৩৩২ এবং মারা গেছে ২ জন, যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৩১৯ মৃত্যু ৫। ইরাকে আক্রান্ত ৬০, মৃত্যু ৬। ভারতে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছে।
সুইডেনে আক্রান্ত ২৪৮, সিঙ্গাপুরে ১৬৬, নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ৩৮২ এবং মৃত্যু ৩, নরওয়েতে আক্রান্ত ১৭৬, বেলজিয়ামে ২৩৯, হংকংয়ে আক্রান্ত ১১৫ এবং মৃত্যু ৩, মালয়েশিয়ায় ১২৯, অস্ট্রিয়ায় ১৩১, অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত ১০০ এবং মৃত্যু ৩, বাহরাইনে ৮৮, কুয়েতে ৬৯, কানাডায় ৭৭, থাইল্যান্ডে ৫৩ এবং মৃত্যু ১, তাইওয়ানে আক্রান্ত ৪৫ এবং মৃত্যু ১, গ্রিসে ৭৩, আমিরাতে ৪৫, আইসল্যান্ডে ৫৮, সান মারিনোতে ৩৬ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু ১, ডেনমার্কে আক্রান্ত ৩৫, লেবাননে ৩২, ইসরায়েলে ৩৯, চেক রিপাবলিকে ৩২, আয়ারল্যান্ডে ২১, আলজেরিয়াতে ২০ এবং ভিয়েতনামে ৩০ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
ওমানে ১৮, ফিলিস্তিনে ২৫, মিসরে ১৮, ফিনল্যান্ডে ২৬, ব্রাজিলে ২৭, ইকুয়েডরে ১৬, পর্তুগালে ৩৩, রাশিয়াতে ২০, ক্রোয়েশিয়ায় ১৩, কাতারে ১৭, ম্যাকাউতে ১১, এস্তোনিয়ায় ১১, জর্জিয়ায় ১৪, রোমানিয়ায় ১৬, আর্জেন্টিনায় ১৪, স্লোভেনিয়ায় ১৭, আজারবাইজানে ১০, বেলারুশে ৭, মেক্সিকোতে ৮, পাকিস্তানে ৭, ফিলিপাইনে আক্রান্ত ১১ এবং মৃত্যু ১, সৌদি আরবে ১৬, চিলিতে ১০, পোল্যান্ডে ১১, স্লোভাকিয়ায় ৫, পেরু ৭, ইন্দোনেশিয়ায় ৬, নিউজিল্যান্ডে ৫, সেনেগালে ৪ ও হাঙ্গেরিতে ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
লুক্সেমবার্গে ৫, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ৩, বসনিয়ায় ৩, ডোমিনিক প্রজাতন্ত্রে ৫, মরক্কোতে ২, আফগানিস্তান ৪, কম্বোডিয়া ২, বুলগেরিয়া ৪, ক্যামেরুন ২, মালদ্বীপ ৪, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩, লাটভিয়ায় ৩, বাংলাদেশে ৩ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়া আন্দোরা, আর্মেনিয়া, জর্ডান, লিথুনিয়া, মোনাকো, নেপাল, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, তিউনিসিয়া, ইউক্রেন, ভুটান, কোস্টারিকা, ভ্যাটিকান সিটি, গিব্রালটার, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং টোগোতে একজন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।