করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের

  • ১৪-মার্চ-২০২০ ০১:৩৩ অপরাহ্ন
Ads

:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::

চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া এ ভাইরাস এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, দিনকে দিন বেড়েই চলেছে এ ভাইরাসে আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি দল জানিয়েছে যে, করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন (টিকা) তৈরি করেছেন তারা। বর্তমানে ভ্যাকসিনটি আরো উন্নত করার কাজ চলছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা সফলভাবে ইঁদুরের ওপর ওই ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালিয়েছেন। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনটি জুনের মধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার (ট্রায়াল) জন্য প্রস্তুত হতে পারে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ সিনিয়র গবেষক ডক্টর পল ম্যাকে বলেছেন, ইঁদুরের ওপর ইনজেকশন দেয়ার এক মাস পর থেকে ফলাফল পেয়েছি আমি। এই ভ্যাকসিন সত্যই কার্যকর হয়েছে।  গবেষক দলটির প্রধান ড. রবিন শটক। তার নেতৃত্বে দলটি বর্তমানে প্যারিসের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করছেন। বানরের ওপর ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা নির্ধারণে তারা সেখানে কাজ করছেন।

ডক্টর ম্যাকে জানিয়েছেন, তারা মানুষের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা করতে মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে আরো অর্থের জন্য আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, যদি আমরা মানুষের ওপর 'ক্লিনিক্যাল' পরীক্ষার জন্য তহবিল পাই, তবে আমরা ভ্যাকসিনটি জুনের মধ্যে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিব।

ম্যাকে আরো জানান, যদি ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের ভ্যাকসিন তৈরিতে সরকারের সমর্থন থাকে তবে তা দুর্দান্ত ফলাফল বয়ে আনবে।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের ওই দলটি জানিয়েছে, মানুষের ওপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষাগুলো সফল হওয়া উচিত। তারা আশাবাদী, একবছরের মধ্যেই রোগীদের জন্য এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

এদিকে, ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করা প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপ জানিয়েছে, তারা সাংহাই ভেটেরিনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ক্যানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে একযোগে কাজ করছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রানীদের দেহে কোভিড -১৯ প্রতিরোধের জন্য একটি ভ্যাকসিন তৈরি করছেন তারা। এটা ভবিষ্যতের প্রাদুর্ভাব এবং এই রোগের পুনরায় উত্থান বন্ধ করবে।

টিভিজি নামের সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাইকেল জারভিস বলেছেন, কোভিড -১৯ এর প্রাদুর্ভাব দেখিয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে রোগের বিস্তারের ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক ব্যয় অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।

তিনি বলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের ভ্যাকসিন এবং চিকিত্সার উন্নয়নের জন্য তহবিল যোগানের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। তবে ভবিষ্যতে প্রাদুর্ভাব বা পুনরায় বিস্তার রোধে এবং কোভিড -১৯ নির্মূল করার ক্ষেত্রে পদ্ধতির বিষয়ে অবগত নন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। শনিবার সকাল পর্যন্ত এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ৪৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন  প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮১ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭২ হাজার ৫৩২ জন।

Ads
Ads