বিসিএস জব ও বিসিসি মেয়র প্রার্থী এক মনীষার গল্প!

  • ২৩-Jul-২০১৮ ০৬:০০ অপরাহ্ন
Ads

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার তিনি। বরিশালের প্রান্তিক মানুষের সমস্যা নিয়ে রাজপথে কয়েক বছর ধরেই সক্রিয়। তাই শ্রমিকদের মধ্যে জনপ্রিয় তিনি। ৩৪তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারের চাকরি ছেড়ে দিয়ে মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতিকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।

 

বরিশালে আসন্ন সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার পেছনেও তাঁর লক্ষ্য ওই একটাই- অবহেলিত মানুষের অধিকার আদায়। মানুষের জন্য কাজ করার এই মানসিকতা তিনি ধরে রেখেছেন নিজের নির্বাচনী প্রচারণাতেও। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মানুষের সেবার জন্য ‘মই’ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে লড়ছেন তিনি।

তারুণ্যে উদ্ভাসিত এই মুখটির নাম মনীষা চক্রবর্তী। বরিশালে সম্ভবত প্রথম কোন নারী মেয়র পদে দাঁড়ালেন৷ তার বয়সী ছেলেমেয়েরা যখন একটি সরকারি চাকুরির জন্য মাথাখারাপ হয়ে রাজপথে হৈচৈ করছে, তিনি তখন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের চাকুরি ছেড়ে দিয়েছেন। কীর্তনখোলার তীরে প্রতিদিন ভোর থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা আর জনসংযোগ নিয়ে পড়ে আছেন৷

দুই দলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের অঢেল বিত্ত ও ক্ষমতার সামনে সাধারণ মানুষের জমানো মাটির ব্যাংকের টাকা দিয়ে নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন৷ বিসিসির সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেশি ব্যয় করবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সাদিক এবং বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার। আর সবচেয়ে কম ব্যয় করবেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তবে প্রধান দুই দলের প্রার্থীর ব্যয়ের প্রধান উৎস নিজস্ব আয় হলেও মনীষার সম্বল সাধারণ মানুষের মাটির ব্যাংক!
গত ২৪ জুন ডা. মনীষা চক্রবর্তী তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় মনীষা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে বরিশালবাসীর সমস্যা সংকট নিরসন ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে লড়াই সংগ্রাম করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা এই নির্বাচন করছি।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের পাশে আছে বড় বড় নেতা মন্ত্রী মহামন্ত্রী আর কর্পোরেট মিডিয়া। আর এই মেয়েটির সম্বল খেটে খাওয়া মানুষ, মুটে মজুর, শ্রমিক, রিকশাচালক, যাদের লড়াই সংগ্রামে তিনি সর্বক্ষণ পাশে থেকেছেন৷ বয়সে ছোট, কিন্তু সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক পেজে তার সাক্ষাৎকারটিতে যে অগাধ জ্ঞান, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সাহসের বিচ্ছুরণ দেখেছি, সেটা অনেক কথিত বুদ্ধিজীবীকেও লজ্জায় ফেলে দেবে।

আমাদের পৌণ:পুণিক ব্যর্থতার ইতিহাস বলে, আমরা সবসময় এমন নেতৃত্বেরই স্বপ্ন দেখি, সমাজ পরিবর্তনের ভারি ভারি বুলি আওড়াই। কিন্তু দিনশেষে সেই কালো-টাকার মালিক, সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক, লুটেরা শাসক শোষকের দালালদেরকেই মনোনীত করি৷ এই চিন্তার পরিবর্তন হওয়া দরকার৷ কেবল প্রশংসা করলেই হবে না৷ ভোট দিতে হবে৷ ‘জিততে পারবে না’ এটা সুবিধাবাদী পলায়নপর এক্সকিউজ৷ আপনি আমি ভোট দেই না বলেই তো এই মানুষগুলো মুলধারার নেতৃত্বে আসতে পারে না।

মেয়র হলে আদতে কি হয়? বস্তুত কিছুই হয় না৷ দ্বি-দলীয় লুটপাটের রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরেও একটা জগৎ থাকতে পারে, সাধারণ জনগণের কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে, সেই মেসেজটা অন্তত জানান দিতে হবে সময়ের কাছে।

 

Ads
Ads